নিখোঁজের দেড়মাস পর পুলিশের সহায়তায় ছেলেকে ফিরে পেল বাবা-মা
১৪ বছরের কিশোর ইয়াছিন আলী। বাড়ি ঢাকার রায়বাজার মহল্লায়। গত দেড় মাস আগে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় সে। এই সময়ে সে কখনও হেঁটে কখনও গাড়িতে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে সবশেষ নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার কাছিকাটা বিশ্বরোড এলাকায় এসে পৌঁছেছে।
জানা যায়, গতকাল রাতে অজ্ঞাত এক কিশোরকে দেখতে পেয়ে সেখানে দায়িত্বরত টহল পুলিশ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বিষয়টি জানায়। পরে ওই কিশোর ইয়াছিনকে জরাজীর্ণ অবস্থায় উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় টহল পুলিশ। এরপর তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে ওই কিশোরের দেওয়া নাম ঠিকানা অনুযায়ী সন্ধান শুরু করে পুলিশ। স্থানীয় এক সাংবাদিকের ফেসবুকে নিখোঁজ সংবাদ প্রচার করা হলে তা নজরে আসে কিশোর ইয়াছিনের পরিবারের।
বিজ্ঞাপন
খবর পেয়ে শনিবার সকালে ঢাকা থেকে গুরুদাসপুরে ছুটে আসে কিশোরী ইয়াসিনের মা ও বড় ভাই। পরে কিশোর ইয়াছিনকে নতুন জামা, প্যান্ট, জুতা ও পরিবারের যাতায়াত খরচ উপহার দেন স্থানীয় এক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক আমিরুল ইসলাম সাগর।
উদ্ধার হওয়া কিশোর ইয়াছিন ঢাকার রায়বাজার মহল্লার শাহ আলমের ছেলে।
বিজ্ঞাপন
ইয়াছিনের মা রিনা বেগম জানান, ছোট বেলায় থেকেই ইয়াছিন খুব চঞ্চল। সে বিভিন্ন সময় বাড়ি থেকে এভাবে বের হয়ে গেলে তাকে খুঁজে আনতে হয়। তিনি জানান, গত দেড় মাস আগে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি ইয়াছিন। আত্মীয় স্বজনসহ বিভিন্নভাবে অনেক জায়গায় সন্ধান চালিয়েছিলাম কিন্তু পাইনি।
শুক্রবার রাতে আমার এক আত্মীয় মোবাইলে কল দিয়ে বলে ফেসবুকে সে ইয়াছিনকে দেখেছে গুরুদাসপুর থানায় আছে। তখন থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে শনিবার সকালে ঢাকা থেকে গুরুদাসপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হই।
দেড় মাস পর নিজের সন্তানকে কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মা রিনা। এসময় তিনি থানা পুলিশ ও সাংবাদিকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
গুরুদাসপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোনোয়ারুজ্জামান জানান, অজ্ঞাত এক কিশোরকে সড়কের পাশে দেখে তাকে উদ্ধার করে পাবনার দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিয়মিত টহল পুলিশের কাছে দিয়ে যায়। পরে দায়িত্বরত পুলিশেরা বিষয়টি জানালে আমি ওই কিশোরকে থানায় নিয়ে আসতে বলি। থানায় আনলে কিশোরের আচরণ আমার কাছে অস্বাভাবিক মনে হয়। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে তার পরিবারের সন্ধানে কার্যক্রম শুরু করি। পরে স্থানীয় এক সাংবাদিকের সহযোগিতায় ফেসবুকের মাধ্যমে নিখোঁজ কিশোরের পরিবারের সন্ধান মিলে। পরে আজ দুপুরে কিশোর ইয়াছিনকে তার মা ও ভাইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
গোলাম রাব্বানী/আরকে