নেসকো নির্বাহী প্রকৌশলী রবিকে বরখাস্ত
ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী রকি চন্দ্র দাস
‘সংবাদমাধ্যমে বিধিবহির্ভূতভাবে বিবৃতি প্রদান’ করায় নর্দান ইলেকট্রিসিটি কোম্পানির (নেসকো) লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ অফিসের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী রকি চন্দ্র দাসকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এদিকে তার বিরুদ্ধে অফিসে ভাঙচুরের মিথ্যা ঘটনা সাজানোর অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে পরিচালক নেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকিউল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলীর ভাঙচুরের অভিযোগকে সাজানো বলে জানিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
নেসকো সূত্রে জানা যায়, সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের ছেলে ও লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবুজ্জামান আহমেদের ডাকে সাড়া না দেওয়ায় গত মঙ্গলবার স্থানীয় ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকর্মী নেসকোর কালীগঞ্জ অফিসে গিয়ে ভাঙচুর ও নির্বাহী প্রকৌশলীকে লাঞ্ছিত করেছে-এমন অভিযোগ করেন কালীগঞ্জ অফিসের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী রকি চন্দ্র দাস। বিষয়টি বিধিবহির্ভূত হওয়ায় নেসকোর ভারপ্রাপ্ত উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. রহমত উল্লাহ-আল-ফারুক গত বুধবার রকি চন্দ্র দাসকে সাময়িক বরখাস্ত করে একটি আদেশ জারি করেন। একই সঙ্গে তাকে রংপুরে প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়।
সূত্রটি আরও জানায়, ওই ঘটনা তদন্তে নেসকোর বগুড়া পরিচালন ও সংরক্ষণ সার্কেলের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. হাসিবুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন উপ-ব্যবস্থাপক (লিগ্যাল) শরিফুল ইসলাম ও নেসকো সৈয়দপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান। গতকাল থেকে কাজ শুরু করেছে তদন্ত কমিটি।
বিজ্ঞাপন
এদিকে দুপুরে তদন্ত কমিটি ছাড়াও নেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকিউল ইসলাম নেসকোর কালীগঞ্জ অফিস পরিদর্শন করেছেন। এসময় তারা ওই অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে ঘণ্টা দেড়েক কথা বলেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকিউল ইসলাম বলেন, ‘পুরো ঘটনা জানতে তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। হামলার ঘটনাটি সাজানো। তারা কাজ শেষ করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরই বিস্তারিত জানানো যাবে। তবে এ ঘটনায় মন্ত্রীপুত্র রাকিবুজ্জামান আহমেদের কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।’
নেসকোর কালীগঞ্জ অফিসের সামনে বেশ কয়েকজন ক্ষুব্ধ গ্রাহক ও প্রত্যক্ষদর্শী বরখাস্তকৃত নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে নানা ধরনের অনিয়মসহ ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ করেছেন। জহির রায়হান নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘ঘটনার দিন ভুতুড়ে বিল নিয়ে কয়েকজন নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরে লোকজন চলে যাওয়ার পর তাদের ফাঁসাতে নির্বাহী প্রকৌশলী রকি চন্দ্র দাস তার অফিসের কয়েকজনকে দিয়ে টেবিলের কাচ ভাঙচুর করিয়ে ছবি তুলে সাংবাদিকদের পাঠান।’
তবে এ বিষয়ে কথা বলতে কল করা হলে রকি চন্দ্র দাসের মোবাইল ফোনটি বন্ধ পওয়া যায়।
নিয়াজ আহমেদ সিপন/আরকে