নিবিড় হত্যা মামলার আসামিদের বাড়িতে ভাঙচুর
শরীয়তপুরে আলোচিত শিশু হৃদয় খান নিবিড় হত্যা মামলার অন্যতম ৩ আসামির বাড়িঘরে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে শরীয়তপুর সদর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের খিলগাঁও এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খিলগাঁও এলাকার মনির খানের পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে হৃদয় খান নিবিড়কে অপহরণের পর হত্যা করে সিয়াম, শাকিল, শাওন চৌকিদার ও এক কিশোর। হত্যার সময় নিবিড়ের বাবা দেশের বাইরে ছিলেন। সম্প্রতি নিবিড়ের বাবা মনির হোসেন খান দেশে ফিরেন। আজ দুপুরে আদালত থেকে ফেরার পর মনির হোসেন খান ও তার স্বজনরা মামলার আসামি শাকিল, শাওন ও ওই কিশোরের বাড়িঘরে ভাঙচুর চালায়।
বিজ্ঞাপন
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সেলিম গাজীর স্ত্রী সুফিয়া বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি দুপুরে ঘরে ঘুমানো ছিলাম। হঠাৎ মনির হোসেন খানসহ ১৫ থেকে ২০ জন লোক আমাদের ঘরে ঢুকে সব জিনিসপত্র ভাঙচুর করতে থাকে। আমার দেবর শাকিল যদি নিবিড় হত্যায় জড়িত থাকে তাহলে ওর ফাঁসি হোক, আর নির্দোষ হলে মুক্তি হোক। এটা আদালতের প্রমাণ হবে। তাই বলে আমাদের বাড়িঘরে ভাঙচুর করা কি আদৌ যৌক্তিক?
অভিযুক্তের বোন আইরিন আক্তার বলেন, আমার ভাই অন্যায় করেছে তাই অন্যায়কারী হিসেবে ওর শাস্তি আমরাও চাই। কিন্তু আমাদের পরিবারের অন্যরা তো অপরাধ করেনি। আমাদের এই ক্ষতি করার কি দরকার ছিল।
বিজ্ঞাপন
তবে ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করে মনির হোসেন খান বলেন, আমি আমার প্রাণপ্রিয় সন্তানকে হারিয়েছে। আমার স্ত্রী এখনও পাগল প্রায়। আসামিদের বাড়িঘরে আমি বা আমার লোকজন কোনো ভাঙচুর চালাইনি। তারা নিজেরাই ভেঙে মিথ্যা দোষারোপ করছে।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর শিশুকানন কিন্ডারগার্টেন স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও খিলগাঁও এলাকার মালেশিয়া প্রবাসী মনির হোসেন খানের ছেলে হৃদয় খান নিবিড়কে (১১) গত ৩১ জুলাই অপহরণ করে হত্যার পর মাটিচাপা দেওয়া হয়। তারপর তার মা নিপা আক্তারের মোবাইলে কল করে মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। মুক্তিপণ চাওয়ার ঘটনা পুলিশকে জানালে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে সিয়াম (২০), শাকিল গাজী (১৮), শাওন চৌকিদার (২০) ও ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরকে আটক করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরের দিন মঙ্গলবার ভোরে খিলগাঁও এলাকার মেসার্স খান ব্রিকসের পাশের একটি নির্জন স্থান থেকে নিবিড়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিবিড়ের দাদা মমিন আলী খাঁন ওইদিনই বাদী হয়ে থানায় ৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় আসামিদের মধ্যে তিনজনকে শরীয়তপুর জেলা কারাগারে এবং ওই কিশোরকে গাজীপুরের কিশোর সংশোধনাগারে পাঠায় আদালত। গত কয়েকদিন আগে নিবিড়ের বাবা মনির হোসেন খাঁন প্রবাস থেকে বাড়ি ফিরে আসেন।
এ বিষয়ে শরীয়তপুর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে এই ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাইফুল ইসলাম সাইফ রুদাদ/এএএ