চুয়াডাঙ্গা-ভারত সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে মিজানুর রহমান (৫০) নামের এক বাংলাদেশি গরু ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।

শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া রক্তাক্ত মরদেহ দেখে সেটি মিজানুর রহমান বলে শনাক্ত করেছে তার পরিবার।

এর আগে গত তিন দিন যাবত মিজানুর রহমান নিখোঁজ ছিলেন বলে জানিয়েছে তার পরিবার। মিজানুর রহমান ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের নবীছদ্দী মণ্ডলের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন যাবত চুয়াডাঙ্গা জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের বেনিপুর গ্রামের শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করতেন।

সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইশাবুল ইসলাম মিল্টন ঢাকা পোস্টকে বলেন, মিজানুর রহমান চোরাকারবারির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি গরুর ব্যবসা করতেন। নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, গত বুধবার রাতে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যায়নি। শনিবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মিজানুর রহমানের রক্তাক্ত মরদেহের ছবি ছড়িয়ে পড়ে। সেই ছবি দেখে তার স্ত্রী নাসিমা খাতুন মরদেহটি তার স্বামীর বলে শনাক্ত করেছেন। তিনি ভারতীয় সীমান্তে বিএসএফ’র গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে।

এদিকে ভারতের দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইনে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে ভারতের নদিয়ায় কৃষ্ণগঞ্জ থানার নোনাগঞ্জ এলাকার সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া কাটতে দেখা যায় অনুপ্রবেশকারীদের। বিষয়টি বিএসএফের নজরে আসতেই তারা প্রতিরোধ করে। তখন অনুপ্রবেশকারীর কয়েকজন বিএসএফের ওপর আক্রমণ করে। অনুপ্রবেশকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে বিএসএফ। বিএসএফ’র ছোড়া গুলিতে জখম হন এক অনুপ্রবেশকারী। তাকে উদ্ধার করে কৃষ্ণগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে জীবননগর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আবু সাঈদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, মিজানুর রহমানকে তিন দিন যাবত খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে পুলিশকে মৌখিকভাবে জানিয়েছিল তার পরিবার। শোনা যাচ্ছে তিনি বিএসএফ’র গুলিতে নিহত হয়েছেন।

ঝিনাইদহ মহেশপুর ৫৮ বিজিবির পরিচালক মাসুদ পারভেজ রানা ঢাকা পোস্টকে বলেন, নিহতের স্ত্রী স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে আমাদের বেনিপুর ক্যাম্পে যোগাযোগ করেছেন। তার স্বামী গত তিন দিন যাবত নিখোঁজ। বাড়ি থেকে রাগ করে বের হয়েছেন। থানাকে জানিয়েছে। আমাদেরকেও অফিসিয়ালি জানিয়েছেন। ভারতে একটি ঘটনা ঘটেছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে আমরা কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছি। বিএসএফ’র সঙ্গে কথা বলব। এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে কি না এবং সেই ব্যাপারে আমরা তদন্ত করবো।

আফজালুল হক/এমজেইউ