রাজবাড়ীর কালুখালীতে রুবেল মন্ডল ওরফে মোয়া (২৬) নামের এক মানসিক প্রতিবন্ধী যুবকের হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে কালুখালী পুলিশ। আর এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে রুবেলের নিজ জন্মদাতা বাবা খলিলুর রহমানকে (৬৯) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত ১০ টায় ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার ডেন্ডাবর এলাকা থেকে খলিলুরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রোববার আদালতে পাঠানো হলে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেন তিনি।

হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনসহ গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রাণবন্ধু চন্দ্র বিশ্বাস।

এর আগে, গত ২৪ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) ভোর ৬ টায় উপজেলার মোহনপুর রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক সংলগ্ন কালুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রোডের দক্ষিণ পাশে ধান ক্ষেতের পানির মধ্যে থেকে মানুষিক প্রতিবন্ধী রুবেল মন্ডল মোয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় রুবেলের মামা দেলোয়ার হোসেন দিনু (৫৯) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে কালুখালী থানায় মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ জানায়,খলিলুর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে জন্ম নেয় রুবেল। তবে রুবেলকে সন্তান হিসেবে মেনে নেননি খলিলুর রহমান। এরপর খলিলুর দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দেন। দ্বিতীয় স্ত্রী আরেকটি বিয়ে করেন। এরপর থেকেই রুবেল তার নানির কাছে বড় হতে থাকে।

১৫ বছর পর্যন্ত সুস্থ থাকলেও পরে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন রুবেল। এরপর রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতেন তিনি। প্রায় প্রতিদিন সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাতে ফিরতেন। কিন্তু গত ২৩ আগস্ট বুধবার বিকেল থেকে আর তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।

এরপরের দিন বৃহস্পতিবার ভোরে কালুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকার একটি ধানখেতে অজ্ঞাত একটি মরদেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে রুবেলের স্বজনরা মরদেহটি রুবেলের বলে শনাক্ত করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তদন্তে বের হয়ে আসে হত্যাকাণ্ডের সাথে রুবেলের পিতা খলিলুর জড়িত। পরে অভিযান চালিয়ে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

কালুখালির ওসি জানিয়েছেন, রুবেলকে কোমল পানীয়র সঙ্গে চেতনাশক খাইয়ে প্রথমে অজ্ঞান করা হয়। পরে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।

মীর সামসুজ্জামান/এমটিআই