কুয়াকাটায় পর্যটন দিবস পালিত, চলবে তিন দিনব্যাপী উৎসব
প্রতি বছরের ন্যায় পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে বিশ্ব পর্যটন দিবস পালিত হচ্ছে।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে পটুয়াখালী জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে কুয়াকাটা পৌরসভার সামনে থেকে একটি শোভাযাত্রা ও র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি কুয়াকাটা মহাসড়ক এবং সমুদ্র সৈকত প্রদক্ষিণ শেষে ট্যুরিজম পার্ক সংলগ্ন এলাকায় পর্যটন মেলা ও আলোচনা সভাস্থলে মিলিত হয়। এ সময় জাতীয় পতাকা উত্তোলন, পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে তিন দিনব্যাপী পর্যটন মেলা ও কনসার্টের উদ্বোধন করেন কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহাঙ্গীর হোসেন।
বিজ্ঞাপন
শোভাযাত্রায় আলাদা আলাদা ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে অংশগ্রহণ করে কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ, কুয়াকাটা পৌরসভা, হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক), ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (কুটুম), ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশন, ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতি, সাংস্কৃতিক সংগঠন কুয়াকাটা মাল্টিমিডিয়া, সামাজিক সংগঠন কুয়াকাটা বয়েস ক্লাবসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
এ সময় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন কুয়াকাটা পৌর মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদার, কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি নাসির উদ্দিন প্রমুখ।
বিজ্ঞাপন
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, নতুন ভাবনা ও পরিকল্পনা দিয়ে পর্যটনকে সাজানো হবে। পর্যটকদের সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে কুয়াকাটার পর্যটন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষ্যে আগামী তিন দিন সৈকতের ট্যুরিজম পার্ক সংলগ্ন এলাকায় মেলা ও কনসার্ট অনুষ্ঠিত হবে।
শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত কুয়াকাটা সৈকতের ট্যুরিজম পার্ক সংলগ্ন এলাকায় মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন চলবে। এতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শিল্পীরা অংশগ্রহণ করবেন।
এদিকে, বিশ্ব পর্যটন দিবস ও তিন দিনের সরকারি ছুটি উপলক্ষ্যে কুয়াকাটার সব হোটেল-মোটেলের ৯০ শতাংশ কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে ইতোমধ্যে।
কুয়াকাটা বয়েস ক্লাবের সভাপতি তৌফিকুল ইসলাম রনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে তা পর্যটকদের বাড়তি বিনোদনের খোরাক জোগাবে। তারই ধারাবাহিকতায় কুয়াকাটা বয়স ক্লাবের আয়োজনে সাঁতার প্রতিযোগিতা এবং হাঁস ধরা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে পর্যটকসহ সবাই অংশগ্রহণ করতে পারবে।
হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মোতালেব শরীফ ঢাকা পোস্টকে বলেন, পর্যটন দিবস ও তিন দিন সরকারি ছুটি উপলক্ষ্যে হোটেল-মোটেলের প্রায় রুমই বুকিং হয়ে গেছে। আমরা হোটেল কর্তৃপক্ষ পর্যটকদের পরিপূর্ণ সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের ইনচার্জ হাসনাইন পারভেজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আশা করছি পর্যটন দিবসে এবং সরকারি তিন দিনের ছুটিকে কেন্দ্র করে অনেক পর্যটকের আগমন ঘটবে। পর্যটকদের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। প্রতিটি পর্যটন স্পটে আমাদের পুলিশ মোতায়েন আছে।
কুয়াকাটার পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা পর্যটকদের সেবায় কুয়াকাটা পৌর প্রশাসন সার্বক্ষণিক নিয়োজিত আছি। আশা করছি আমাদের এ উৎসবে এবার ব্যাপক পর্যটকের সমাগম হবে। কুয়াকাটা পৌরসভার সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী এ আয়োজন সফল করার জন্য নিরলস চেষ্টা করে যাচ্ছে।
কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহাঙ্গীর হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, তিন দিনের ছুটিতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং কুয়াকাটা পৌরসভাসহ পর্যটন ব্যবসায়ীরা মিলে উৎসবের উদ্যোগ নিয়েছে। পর্যটন দিবস ও টানা তিন দিনের সরকারি ছুটিতে কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ, মহিপুর থানা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ সাদা পোশাকে নজরদারি থাকবে ও উপজেলা প্রশাসন কয়েক ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। আমরা পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি।
এমজেইউ