চুয়াডাঙ্গার ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হাফিজুর রহমানকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় ক্লাস বর্জন করে মানববন্ধন করেছেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। পরে বিক্ষোভ মিছিলের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় জেলা প্রশাসক ডা. কিসিঞ্জার চাকমা বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে সঠিক বিচারের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

সোমবার (৯ অক্টোবর) সকালে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাজিদ রহমান বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরাই দাবি জানিয়েছে, এ ধরনের সামাজিক অবক্ষয়ের ঘটনা আর যেন চুয়াডাঙ্গায় না ঘটে। আমরা আজ তাদের উদ্যোগে পাশে দাঁড়িয়েছি। আমরা প্রতীকী প্রতিবাদ নিয়ে এসেছি। মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা সারা দেশে জানাতে চায়, এই ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া হবে না। সামাজিকভাবে আমরা এত নিচে নেমে গেছি, এটা থেকে উত্তরণ দরকার।

সহকারী শিক্ষক শিখা রানী শিল বলেন, শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। শাসন কমিয়ে দেওয়া, বেত উঠিয়ে দেওয়া, পরীক্ষার হলে অসদুপায় অবলম্বন করার পরও তাকে বসতে দেওয়া, টিসি না দেওয়া এসব কারণে সামাজিক অবক্ষয় হচ্ছে। কড়া প্রশাসন আর আমাদের হাতে নেই। ফলে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। আমরা এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

এদিকে, শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা শিক্ষার্থী মো. সাইফুল আমিন শীর্ষ আজকের পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। আজ সোমবার সকালে শারীরিক অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে প্রধান শিক্ষক বরাবর একটি ছুটির আবেদন করে মো. সাইফুল আমিন শীর্ষ। ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেখ সফিয়ার রহমান বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করে বলেন, আজ সকালে ওই শিক্ষার্থী শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে একটি দরখাস্ত দিয়ে ছুটির আবেদন করেছে। এ কারণে আজকের ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা পরীক্ষায় অংশ নেয়নি ওই পরীক্ষার্থী।

উল্লেখ্য, রোববার চুয়াডাঙ্গা ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (বাংলা) মো. হাফিজুর রহমান বিদ্যালয়ের ১১২নং কক্ষে দশম শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষার দায়িত্ব পালন করছিলেন। পরীক্ষা চলাকালে প্রভাতি শাখার দশম শ্রেণির ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার্থী মো. সাইফুল আমিন শীর্ষ অসদুপায় অবলম্বন ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এ সময় দায়িত্বরত শিক্ষক বাধা প্রদান করায় শিক্ষার্থী সাইফুল আমিন শীর্ষ ওই শিক্ষককে চড়-থাপ্পড় দেয়। এ ঘটনার সিসিটিভির ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয়ে যায়। এতে নিন্দার ঝড় উঠে। ঘটনার দিন বিকেলেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেখ সফিয়ার রহমান জেলা প্রশাসক ও সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। পরে এদিন রাতেই জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

মোহাম্মদ মিলন/এমজেইউ