বিয়ের চাপ দেওয়ায় প্রেমিকাকে হত্যা, স্বামী-স্ত্রীর যাবজ্জীবন
লালমনিরহাটে কবিরাজ প্রেমিকাকে হত্যার দায়ে স্বামী-স্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদেরকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সোমবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে এ রায় দেন লালমনিরহাট আদালতের দায়রা জজ মো. মিজানুর রহমান। আদালতের সরকারি কৌশলী (পিপি) অ্যাডভোকেট আকমল হোসেন আহমেদ রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- লালমনিরহাট সদর উপজেলার খোচাবাড়ি এলাকার মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে দবিয়ার রহমান (৪০) ও তার স্ত্রী শাহিনা বেগম (৩৩)।
মৃত প্রেমিকা কবিরাজ শাহিনা বেওয়া আদিতমারী উপজেলার খাতাপাড়া শিল্পকুঠি এলাকার ভ্যানচালক মৃত তৈয়ব আলীর স্ত্রী।
বিজ্ঞাপন
জানা যায়, স্বামীর মৃত্যুর পর শাহিনা বেওয়া ছোট ভাই একরামুল হকের বাড়ির পাশে বাড়ি করে থাকতেন। অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ ও কবিরাজি করে এক ছেলে ও দুই মেয়ের বিয়ে দেন শাহিনা বেওয়া। কবিরাজি করতে গিয়ে দবিয়ার রহমানের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এর একপর্যায়ে শাহিনা বেওয়া বিয়ের জন্য চাপ দেন প্রেমিক দবিয়ার রহমানকে। বিষয়টি জানাজানি হলে দবিয়ার রহমানের স্ত্রী শাহিনা বেগম ক্ষিপ্ত হন। পরে শাহিনা বেগম ও তার স্বামী পরিকল্পনা করে শাহিনা বেওয়াকে ২০২০ সালের ৬ নভেম্বর ডেকে নেয়।
পরে তারা কৌশলে ওই দিন রাতে শাহিনা বেওয়াকে সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কালমাটি এলাকায় তিস্তা নদীর চরে নিয়ে হাত পা বেঁধে শ্বাস রোধে হত্যা করেন। পরদিন ৭ নভেম্বর স্থানীয়দের খবরে সদর থানা পুলিশ শাহিনা বেওয়ার মরদেহ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় ওই দিন অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন মৃত শাহিনা বেওয়ার ছোট ভাই একরামুল হক। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (এসআই) মশিউর রহমান প্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যার রহস্য উদঘাটন করে অভিযুক্ত দবিয়ার রহমান ও তার স্ত্রী শাহিনা বেগমকে গ্রেপ্তার করেন।
২০২১ সালের ৩১ মার্চ অভিযুক্ত দবিয়ার ও তার স্ত্রী শাহিনার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। এ মামলায় ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ মামলার রায় দেন আদালত।
নিয়াজ আহমেদ সিপন/এএএ