কুমিল্লায় ঐক্য পরিষদের মিছিলে হামলায় আহতদের পাশে বিএনপি
কুমিল্লায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের বিক্ষোভ মিছিলে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের হামলার ঘটনা খতিয়ে দেখছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। শনিবার (২১ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তারা কুমিল্লার ঠাকুরপাড়া এলাকায় অবস্থিত শ্মশান কালিমন্দিরে গিয়ে হামলায় আহতদের সঙ্গে কথা বলেন। আহতদের কাছ থেকে ঘটনার দিনের বিস্তারিত তথ্য জানেন এবং তাদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন।
এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য বিজন কান্তি সরকার, কেন্দ্রীয় বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস, বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উদবাতুল বারী আবু, সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপু, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
এছাড়াও হামলায় আহত যুব ঐক্য পরিষদ নেতা আদিত্য দাস, ছাত্র ঐক্য পরিষদের নেতা সুনীল দাস, তন্ময় দাস ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন উপস্থিত।
এর আগে গত ১৬ অক্টোবর রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভা হয়। সভায় স্থায়ী কমিটির ১১ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সভায় কুমিল্লায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের বিক্ষোভ মিছিলে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের হামলার বিষয়টি ওঠে আসে। সভায় সম্প্রতি দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে কুমিল্লায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের মিছিলে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। হামলার বিষয়টি তদন্ত করে ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় বিএনপির পক্ষ থেকে।
বিজ্ঞাপন
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলুকে প্রধান করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য বিজন কান্তি সরকার, বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস।
প্রসঙ্গত, গত ৪ অক্টোবর কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে শারদীয় দুর্গাপূজার প্রস্তুতি উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সভায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদেরকে মদমুক্ত পূজা উদযাপন করতে বলেন কুমিল্লা-৬ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার।
এ সময় পূজা চলাকালে মদ খেয়ে মণ্ডপে নাচানাচি না করে মাদকমুক্ত পূজা আয়োজনের আহ্বান জানিয়ে এমপি বাহার বলেন, ‘পূজা চলাকালে মদ খেয়ে নাচানাচি বন্ধ করতে হবে। সারারাত নাচানাচি করে সকালে ঘুমিয়ে থাকলে চলবে না। আসুন কুমিল্লা থেকেই শুরু হোক মাদকমুক্ত পূজা আয়োজন। মণ্ডপে লিখে দেবেন ‘মাদকমুক্ত পূজা’। মদমুক্ত পূজা করলে পূজার সংখ্যা কমবে, কুমিল্লায় এত মণ্ডপ হবে না।’
এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাতে যুব ঐক্য পরিষদ, ছাত্র ঐক্য পরিষদ এবং জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। নগরীর কান্দিরপাড়, নজরুল অ্যাভিনিউ এলাকায় মিছিলে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আদিত্য দাস, সুনীল দাস ও তন্ময় দাস নামে যুব ঐক্য পরিষদ ও ছাত্র ঐক্য পরিষদের তিন নেতা আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের সমর্থকেরা এ হামলা চালান বলে অভিযোগ করা হয় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে।
আরিফ আজগর/আরএআর