বগুড়া জেলা কারাগারে নিহত কারারক্ষী একরামুল হক মাদকাসক্ত ছিলেন বলে তথ্য পেয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে আরেক কারারক্ষী মামুনের শরীরেও মিলেছে মাদক। শনিবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বগুড়া জেলা কারাগারের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা জানান, কারারক্ষী একরামুল ও মামুন একসঙ্গে মাদক সেবন করতেন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে এর প্রমাণ মিলেছে। পরে মামুনের ডোপ টেস্ট করা হয়। শনিবার পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন বিভাগে পাঠানো হয়েছে। মামুনের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কারারক্ষী একরামুল হকের বিষয়ে জেলা কারাগার সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা করে তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। আর মরদেহের ভিসেরা পরীক্ষা করার জন্য ঢাকার সিআইডি পুলিশের ফরেনসিক বিভাগে নমুনা পাঠানো হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে ভিসেরা প্রতিবেদন আসবে।

গত বুধবার (১৮ অক্টোবর) রাত ১ থেকে ৩টা পর্যন্ত বগুড়া জেলা কারাগারের দুই নম্বর গেটে ডিউটি ছিল কারারক্ষী একরামুলের। এরপরের শিফটের ডিউটি ছিল মামুনের। কিন্তু তিনি ডিউটিতে যাননি। পরে বিষয়টি জানার জন্য খোঁজ নেওয়া হয়। তখন মামুন নিজের অসুস্থতার কথা বললে আরেকজনকে সেখানে পাঠানো হয়। এরপর সকালের দিকে বোঝা যায় একরামুল নিখোঁজ রয়েছেন। পর দিন খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কারাগারের দুই নম্বর গেটের সামনের কালভার্টের নিচের ড্রেনে ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় একরামুলের মরদেহ পাওয়া যায়।

একরামুল হক নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার কান্দা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি প্রায় দুই বছর ধরে বগুড়া জেলা কারাগারে কর্মরত ছিলেন।  

কারাগার সূত্রে জানা যায়, কারারক্ষী একরামুল হকের মৃত্যুর ঘটনায় রাজশাহীর ডিআইজি (প্রিজন) মো. কামাল হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কারা কর্তৃপক্ষ। কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন- নওগাঁর জেল সুপার মো. নজরুল ইসলাম ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেল সুপার মো. শরিফুল ইসলাম। এই কমিটি শুক্রবার ও শনিবার দুই দিন বগুড়া জেলা কারাগারে তদন্ত করেন। পরে আজ সন্ধ্যার দিকে চলে যান তারা।

এ বিষয়ে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার বলেন, ডোপ টেস্টের বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। তবে কারারক্ষী নিহতের ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

আসাফ-উদ-দৌলা নিওন/আরএআর