মানিকগঞ্জে যানবাহনে পুলিশের তল্লাশি, হয়রানির অভিযোগ বিএনপির
সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রাজধানী ঢাকায় আগামীকাল শনিবার (২৮ অক্টোবর) বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে মানিকগঞ্জে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক এবং মানিকগঞ্জ-হেমায়েতপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে তল্লাশি চৌকি বসিয়েছে পুলিশ। বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
এদিকে মানিকগঞ্জে অভিযান চালিয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সাত নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। নেতাকর্মীদের আটক করা হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে এবং ঢাকায় প্রবেশের মুখে সড়কে তল্লাশি চৌকি বসিয়ে নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
তবে পুলিশ কর্মকর্তা বলছেন, কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নয়, বরং অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার এবং সন্ত্রাসী ও আসামিদের গ্রেপ্তারে নিয়মিত তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।
বিএনপির আটক নেতাকর্মীরা হলেন- মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার ফকুরহাটি ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি তমিজ উদ্দিন, উপজেলার হরগজ ইউনিয়ন বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, ফকুরহাটি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি বাদশা মিয়া, সিঙ্গাইর উপজেলা বিএনপির প্রবাসী কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালাম, সদর উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি জিয়াউর রহমান, ফকুরহাটি ইউনিয়ন যুবদলের কর্মী মোতালেব হোসেন, ফকুরহাটি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রাইসুল ইসলাম।
বিজ্ঞাপন
জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তল্লাশি চৌকিতে ঢাকাগামী বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশি চালায় সদর থানা পুলিশ এবং জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকাগামী বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। এ সময় বাসের যাত্রীদের বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। অন্যদিকে রাজধানী ঢাকার অন্যতম প্রবেশমুখ মানিকগঞ্জ-হেমায়েতপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ধল্লা এলাকাতেও বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশি চালানোর সময় যাত্রীদের জেরা করা হচ্ছে।
মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তল্লাশিতে দায়িত্বে থাকা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শাহ আলম জানান, যানবাহনের যাত্রীর মধ্যে কাউকে সন্দেভাজন হলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ছাড়া কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না।
সিঙ্গাইর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবিদুর রহমান খান জানান, ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশি চালাচ্ছে। আজ ভোর থেকে সেখানে তল্লাশি আরও জোরদার করা হয়েছে।
তবে ধল্লা পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, এ ফাঁড়ির সামনে প্রতিনিয়ত তল্লাশি করা হয়। কোনো দলের কর্মসূচি উপলক্ষ্যে এই তল্লাশি করা হচ্ছে না।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বিভিন্ন স্থানে এবং বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সাত নেতাকর্মীকে আটক করেছে। ঢাকায় দলের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে তাদের আটক করা হয়েছে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবীর জানান, এই বাকশাল সরকারের নির্দেশে পুলিশ জেলার বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালাচ্ছে। বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে অভিযান চালিয়ে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। ঢাকার মহাসমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতে তল্লাশি চৌকি বসিয়েছে পুলিশ। নেতাকর্মীদের হয়রানি করছে। কিন্তু এসব করে কোনো লাভ হবে না। ইতোমধ্যে অনেক নেতাকর্মী ঢাকায় পৌঁছে গেছেন এবং কালকে ঢাকার মহাসমাবেশে মানিকগঞ্জ থেকে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেবেন।
এ বিষয়ে সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রউফ সরকার জানান, মহাসড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মীদের তল্লাশি করা হচ্ছে না। এটি আমাদের নিয়মিত কর্যক্রমের একটি অংশ। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এবং মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আর বিএনপির কোনো নেতাকর্মীকে হয়রানি বা আটকের বিষয়টি সঠিক নয়। তবে বিএনপির তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা মামলার আসামি।
সোহেল হোসেন/আরএআর