২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ
রাত পোহালেই ইলিশ শিকারে নামবেন জেলেরা
প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। রাত পোহালেই ইলিশ শিকারে নদীতে নামবেন জেলেরা। গত ১১ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ২২ দিনের এ নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে ২ নভেম্বর রাত ১২টায়।
জেলেরা জানান, নৌকা ও ট্রলার মেরামত, জাল মেরামতসহ যাবতীয় পূর্ব প্রস্তুতি শেষ করে তারা এখন নদীতে নামার অপেক্ষায় আছেন।
বিজ্ঞাপন
রাজবাড়ী সদর উপজেলার গোদারবাজার এলাকার জেলে রশিদ, সাদ্দাম, নরেণ হালদারসহ একাধিক জেলে জানান, দীর্ঘ ২২ দিন পর নদীতে মাছ শিকারে নামবেন তারা। নিষেধাজ্ঞার এই ২২ দিন বাড়িতে অলস বসে ছিলেন। এবার জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়লে তাদের পরিবারের আর্থিক কষ্ট ঘুচবে।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
অন্তরমোড় এলাকার জেলে তপন সরকার, নিমাই হালদার, শ্যামল সরকার ও দৌলতদিয়া ঘাট এলাকার জেলে শুকচান হালদার, কানু হালদার, অশোক হালদার বলেন, মা ইলিশ না ধরার জন্য সরকার যে নিষেধাজ্ঞা দেয়, আমরা তা মানি। তবে পাবনা, ঢালার চর, রাখালগাছি এলাকার অসাধু জেলেরা এসে অধিকাংশ ইলিশ ধরে নিয়ে যায়। যে কারণে অভিযান শেষে নদীতে নেমে আমরা কোনো মাছ পাই না।
তারা বলেন, ঋণ করে নতুন জাল, নৌকা মেরামত করতে শ্রমিকদের টাকা দিতে হয়। এরপর নদীতে মাছ না পাওয়া গেলে খুব খারাপ অবস্থায় পড়তে হয়।
তারা আরও বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় যে পরিমাণ খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়, তা দিয়ে কিছুই হয় না। এখনকার বাজারে জিনিসপত্রের যে দাম তাতে সংসার নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। এমনকি সন্তানদের পড়া-লেখার খরচ চালানোও অসম্ভব। ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞার সময় কোনো জেলেই নদীতে নামতে পারবে না। তাহলেই মা ইলিশ রক্ষা করা সম্ভব।
রাজবাড়ী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান বলেন, জাতীয় সম্পদ ইলিশ রক্ষায় সরকার ২২ দিনের যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তা বাস্তবায়নে জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্সের সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত ছিল। জেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, মৎস্য বিভাগ ও নৌ-পুলিশ মিলে অভিযান সফল করেছি। এরপরও কিছু অসাধু জেলে মাছ শিকার করেছে। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকেই নদীতে নামতে প্রস্তুতি নিয়েছেন। আশা করি তারা কাঙ্ক্ষিত মাছ শিকার করতে পারবেন।
মীর সামসুজ্জামান/এমএসএ