বাসদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নেতারা
‘পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে মানুষ কষ্টে আছে’
সরকারের দুঃশাসন, দুর্নীতি-লুটপাট ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে মানুষ অসহনীয় কষ্টে আছে বলে অভিযোগ করেছে বাসদ (মার্কসবাদী) নেতারা। দলটির নেতাদের অভিযোগ, মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ, সভা সমাবেশে বিনা উসকানিতে পুলিশের হামলা, গ্রেপ্তার, গুম ও খুনের মাধ্যমে দেশে চূড়ান্ত ভীতির পরিবেশ তৈরি করেছে বর্তমান সরকার। এই সুযোগে উন্নয়নের নামে মেগাপ্রজেক্ট গ্রহণ করে মেগা লুটপাটের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। লুটপাটের এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আরও একটি প্রহসনের নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসতে চায় আওয়ামী লীগ।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে মহান রুশ বিপ্লব বার্ষিকী ও বাসদ (মার্কসবাদী)’র ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত জনসভায় দলটির নেতারা এ অভিযোগ করেন। এর আগে বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে নগরীতে লাল পতাকা মিছিল করে দলটির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
বিজ্ঞাপন
বাসদ (মার্কসবাদী) রংপুর জেলা কমিটি আয়োজিত জনসভায় সভাপতিত্ব করেন পার্টির জেলা আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন বাবলু। এতে বক্তব্য দেন বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরামের সদস্য আহসানুল আরেফিন তিতু, নীলফামারী জেলা সংগঠক রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি রংপুর জেলা সদস্য মেহেদী হাসান, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট রংপুর জেলা আহ্বায়ক সাজু বাসফোর, বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন রংপুর জেলার আহ্বায়ক সুরেশ বাসফোর প্রমুখ।
বিজ্ঞাপন
জনসভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, আন্তর্জাতিক পরিসরে সাম্রাজ্যবাদীদের যুদ্ধ চক্রান্তের ফলে ফিলিস্তিন, ইউক্রেন, ইয়েমেন, সুদানসহ বিশ্বের দেশে দেশে লাখ লাখ নিরীহ মানুষ, নারী-শিশু প্রাণ হারাচ্ছে। এই যুদ্ধই আজকের দিনে পুঁজিবাদ সাম্রাজ্যবাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন। মানুষের বাঁচার প্রয়োজনীয় উপকরণ নয়, অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখতে যুদ্ধাস্ত্র তৈরি এবং সেই অস্ত্র বিক্রি করে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার মুনাফা করছে সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলো। এভাবে শ্রমজীবী মানুষের রক্ত এবং লাশের উপর দাঁড়িয়ে আছে পুঁজিবাদী সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থা।
তারা আরও বলেন, ১০৬ বছর আগে পৃথিবীর বুকে সর্বহারা শ্রেণি মার্কসবাদ- লেনিনবাদের শিক্ষায় বিপ্লবের মাধ্যমে যে নতুন সমাজ প্রতিষ্ঠা করেছিল তার তুলনা নেই । ১৯১৭ সালের ৭ নভেম্বর বিপ্লবের তাৎপর্য কেবল রাশিয়ার মাটিতে সীমাবদ্ধ ছিল না, দুনিয়ার দেশে দেশে শ্রমজীবী মানুষের কাছে এনেছিলো মানবমুক্তির এক নতুন বার্তা। মহান লেনিনের নেতৃত্বে নভেম্বর বিপ্লবের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় এমন এক সমাজ যেখানে দারিদ্র ও ক্ষুধা নেই। নেই বেকারত্ব ও অশিক্ষা, নেই ভিক্ষা ও পতিতাবৃত্তি । শিক্ষা ছিল বিনামূল্যে, চাকুরি ছিল নিশ্চিত। বেঁচে থাকার কোনো উপকরণের অভাব ছিল না। নারী-পুরুষের সমান অধিকার সকল ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। শিশুদের দিয়েছিল অবাধ বিকাশের অধিকার। বিশ্বের বড় বড় মনীষীগণ দুহাত তুলে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন এই সমাজ ব্যবস্থাকে। সাম্রাজ্যবাদীদের যুদ্ধ চক্রান্তের বিপরীতে মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছিল এই সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা। এর নেতৃত্বে গড়ে উঠেছিল যুদ্ধবিরোধী শান্তি শিবির।
এ সময় বামপন্থিদের নেতৃত্বে ব্যাপক গণআন্দোলন গড়ে তুলে নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে বাধ্য করে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে সবােকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান দলটির নেতারা।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এএএ