ঝালকাঠির রাজাপুরের বারবাকপুর এলাকায় শত বছরের পুরোনো রাস্তা উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, বারবাকপুর দারুস সুন্নত দ্বীনিয়া এতিমখানা ও হাফিজিয়া মাদরাসা নামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালক মাওলানা আব্দুল কবির অবৈধভাবে দীর্ঘ ২২ বছর রাস্তাটি দখল করে এলাকাবাসীর হাঁটার রাস্তা বন্ধ করে রাখেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মাহমুদ হাসান রানাসহ একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, আব্দুল কবির দেয়াল তুলে রাস্তাটি দীর্ঘ ২২ বছর ধরে দখল করে রেখেছিলেন। এতে আমাদের এলাকাবাসীর হাঁটাচলা, কৃষিকাজের জন্য ব্যবহৃত ট্রাক্টরসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র আনা-নেওয়া করতে পারতাম না। এরপর এলাকাবাসী স্থানীয় ইউপি সদস্য, চেয়ারম্যানসহ গণমান্য ব্যক্তি এবং রাজাপুর উপজেলার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। আমাদের অভিযোগ আমলে নিয়ে সত্যতা যাচাই করে গত ২৫ জুলাই তৎকালীন এসিল্যান্ড ফারজানা ববি মিতু এক সপ্তাহের মধ্যে দেয়াল উচ্ছেদ করার নোটিশ দেন। তিনি (এসিল্যান্ড) ও সার্ভেয়ার সরজমিনে এসে জমি মেপে আমাদের বুঝিয়ে দেন। কিন্তু মাওলানা আব্দুল কবির নোটিশের তোয়াক্কা না করে আদালতে নিজের সম্পত্তি দাবি করে মামলা দায়ের করলে আদালত উচ্ছেদে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

পরে আমরা ভূমি অফিসের দেওয়া উচ্ছেদ নোটিশ আদালতে পেশ করলে আদালত আব্দুল কবিরের পক্ষে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেন। কারণ কবিরের মামলায় দাগ নং-৮২৬ আর ভূমি অফিসের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা নোটিশে দাগ নং-৮৩১। তারপরও আব্দুল কবির রাস্তাটা তার দখলে রেখে দেয়। এরপর স্থানীয় ইউপি সদস্য, চেয়ারম্যান রাস্তাটি পরিমাপ করে সীমানা পিলার বসিয়ে দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মাওলানা আব্দুল কবির ঢাকা পোস্টকে বলেন, এই সম্পত্তি আমাদের। একটি মহল তাদের পেশিশক্তির জোরে আমাদের সম্পত্তিতে পিলার বসিয়েছে।

৮২৬নং দাগের জমি নিয়ে বর্তমানে মামলা চলমান। তবে রাস্তার সম্পত্তি ৮৩১নং দাগের। তাহলে ওই জমি কেন দখল করে রেখেছেন এমন প্রশ্নে আব্দুল কবির বলেন, ৮৩১নং দাগে সম্পত্তি ভুলবশত বেশি রেকর্ড হয়েছে।

এ বিষয়ে ইউপি সদস্য আসলাম হোসেন লিটু ঢাকা পোস্টকে জানান, কবির মাওলানার ওই দাগে কোনো জায়গা নেই। তিনি জবরদখল করে দেয়াল করে রেখেছিলেন। সাধারণ জনগণের রাস্তার প্রয়োজনে পরিমাপ করে পিলার স্থাপন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে কথা হয় তৎকালীন এসিল্যান্ড ফারজানা ববি মিতুর সঙ্গে। তিনি ঢাকা পোস্টকে জানান, মনিরুজ্জামান মধু, মাহমুদ হাসান রানাসহ স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ দিলে উভয় পক্ষের কাগজপত্র দেখে এবং সরেজমিন পরিদর্শন করে ৮৩১নং দাগের জমিটি সরকারি হওয়ায় মাওলানা আব্দুল কবিরকে উচ্ছেদ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এরপর কি হয়েছে তা তিনি জানেন না।

এমজেইউ