সিরাজগঞ্জের ৬টি আসন থেকে নৌকা চান ৪৫ জন
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য সিরাজগঞ্জে ছয়টি সংসদীয় আসনের বিপরীতে এখন পর্যন্ত নৌকা প্রতীকের জন্য ৪৫ জন প্রার্থী আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক পেতে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন ভাই-বোন, দুই-বোনসহ জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এম মুনসুর আলীর দুই দৌহিত্র, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদক ছাড়াও উপজেলা চেয়ারম্যান ও মেয়রেরা।
তবে এর সঠিক তথ্য জেলা আওয়ামী লীগের কাছে নেই। অনেকেই আবার ইতোমধ্যে মনোনয়নপত্র জমাও দিয়েছেন। তবে দিন শেষে দল যাকে নৌকা দেবে তার জন্যই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবে আওয়ামী লীগ।
বিজ্ঞাপন
এর মধ্যে সবচেয়ে কম মনোনয়নপত্র উত্তোলন হয়েছে সিরাজগঞ্জ-১ (কাজিপুর ও সদর আংশিক) আসনে ও সবচেয়ে বেশি হয়েছে সিরাজগঞ্জ-৩ (তাড়াশ-রায়গঞ্জ ও সলঙ্গা আংশিক) আসনে। সিরাজগঞ্জ-১ (কাজিপুর ও সদর আংশিক) আসন থেকে দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন দুইজন ও সিরাজগঞ্জ-৩ (তাড়াশ-রায়গঞ্জ ও সলঙ্গা আংশিক) আসন থেকে দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ১৩ জন।
সিরাজগঞ্জ-১ (কাজিপুর ও সদর আংশিক) আসনে থেকে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন শহীদ এম মুনসুর আলীর দুই দৌহিত্র। সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মাদ নাসিমের ছেলে বর্তমান সংসদ সদস্য প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয় ও তার চাচাতো ভাই শেহেরিন সেলিম রিপন।
বিজ্ঞাপন
সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ৭ জন। তারা হলেন- বর্তমান সংসদ সদস্য ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট কেএম হোসেন আলী হাসান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আব্দুস সামাদ তালুকদার, সিরাজগঞ্জ পৌর মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা, সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) গাজী অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জান্নাত আরা তালুকদার হেনরী ও শহীদ এম মুনসুর আলীর দৌহিত্র শেহেরিন সেলিম রিপন।
সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ ও সলঙ্গা আংশিক) আসনে ১৩ জন মনোনয়নপত্র কিনেছেন। তারা হলেন- বর্তমান এমপি ডা. মো. আব্দুল আজিজ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য এবং আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান ড. হোসেন মনসুর, কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সহ-সভাপতি কৃষিবিদ সাখাওয়াত হোসেন সুইট, সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম মানিক, জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শিল্পপতি লুৎফর রহমান দিলু, প্রয়াত সাবেক এমপি ইসহাক হোসেন তালুকদারের ছেলে রায়গঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইমরুল হোসেন তালুকদার ইমন, রায়গঞ্জ উপজেলা আ.লীগের সভাপতি আব্দুল হাদি আলমাজি জিন্নাহ, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ হৃদয়, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল হালিম খান দুলাল, তাড়াশ উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান মনি, তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কর্মকার, রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরিফুল আলম খন্দকার ও তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হোসনে আরা পারভীন লাভলী।
সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া ও সলঙ্গা আংশিক) আসনে মনোনয়নপত্র কিনেছেন ৭ জন। তারা হলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমামের ছেলে বর্তমান সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম, সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম শফি, সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত আব্দুল লতিফ মির্জার মেয়ে সেলিনা মির্জা মুক্তি, উল্লাপাড়া পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম, সলপ ইউপি চেয়ারম্যান শওকত ওসমান ও ক্রীড়া পরিদপ্তর, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপ-পরিচালক (অব:) ইয়াছিন আলী, কেন্দ্রীয় যুবলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক জহুরুল ইসলাম মিল্টন।
সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি- চৌহালী) আসনে ৫ জন মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। তারা হলেন, সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, বর্তমান এমপি আব্দুল মমিন মন্ডল, বেলকুচি পৌর সভার মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা, বনানী থানা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মীর মোশারফ হোসেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ আলী।
সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনে ভাই-বোন ও দুই বোনসহ আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র কিনেছেন ১১ জন। তারা হলেন- বর্তমান সংসদ সদস্য মেরিনা জাহান কবিতা, তার ভাই সাবেক সংসদ সদস্য চয়ন ইসলাম, মিল্কভিটার ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ লাভলু, কেন্দ্রীয় যুবলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সাজ্জাদ হায়দার লিটন, সাবেক পৌর মেয়র হালিমুল হক মিরু, বর্তমান পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মনির আক্তার খান তরু লোদী, উপজেলা চেয়ারম্যান আজাদ রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মুস্তাক আহমেদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান ছাড়াও সাবেক সংসদ সদস্য হাসিবুর রহমান স্বপনের বড় মেয়ে ড. ফারজানা রহমান সম্পা ও ছোট মেয়ে ফেরদৌসী রহমান শান্তা।
সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) গাজী অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার কন্যা শেখ হাসিনার একজন কর্মী হয়ে রাজনীতি করি। মুক্তিযুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছি। যোগ্য মনে করে যদি আওয়ামী লীগ সভাপতি আমাকে নৌকা প্রতীক দেন তাহলে তার দেখানো পথে সবাইকে নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে কাজ করে যাব। এছাড়া আমি ছাড়াও তিনি যাকেই নৌকা উপহার দিবেন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে তাকেই জয়ী করতে কাজ করব। তিনি যাকেই নৌকা দেবেন, আওয়ামী লীগ তাকেই জয়ী করতে কাজ করবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ তালুকদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, একটা রাজনৈতিক দলে অনেক নেতাকর্মীরই এমপি হবার আকাঙ্ক্ষা থাকে, সেখান থেকেই সবাই দলীয় মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেছেন। আমরা অনেকেই দলীয় মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেছি কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি আসনে একজন করে মনোনয়ন দিবেন। তিনি যাকেই নৌকা দেবেন, আমরা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাকেই জয়ী করতে কাজ করব।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী দেশে অভাবনীয় উন্নয়ন করেছেন। এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আমরা যেমন সবাই ঐক্যবদ্ধ্য হয়ে কাজ করব, তেমনি জনগণও এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আবারও নৌকা প্রতীকে ভোট দেবেন।
শুভ কুমার ঘোষ/আরকে