দোকান থেকে সালামি নিচ্ছে হাতি

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেশে এক সপ্তাহের সর্বাত্মক লকডাউন চলছে। লকডাউন বাস্তবায়নে মাঠপর্যায়ে কাজ করছে প্রশাসন। প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া কাউকে রাস্তায় বের হতে দিচ্ছে না পুলিশ। এই ফাঁকে ঠাকুরগাঁও শহর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এক হাতি, নিচ্ছে সালামি। বুধবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের রাস্তায় হাতিটি দেখা যায়। 

কখনো পথচারীর কাছে কখনো বা ওষুধের দোকান কিংবা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান থেকে সালামি নিচ্ছে হাতিটি।  হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণ করছে তার পিঠে বসা এক মাহুত। নাম তার আল আমিন।

আল আমিনের দাবি- এটা কোনো চাঁদা নয়, সালামি। কাউকে জোড় করা হয় না। সবাই খুশি মনে টাকা দিচ্ছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, লকডাউনে যারা প্রয়োজনীয় জিনিস নিতে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন তাদের সামনে শুঁড় তুলে সালাম দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ছে হাতিটি। এরপর শুঁড়ের মাথায় টাকা গুঁজে নিচ্ছে সে। যতক্ষণ না টাকা দেওয়া হচ্ছে সামনে থেকে সরছে না হাতিটি।

স্থানীয়রা জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই হাতিটি বিভিন্ন এলাকায় পথচারী, যানবাহন ও দোকান থেকে টাকা তোলা শুরু করেছে। টাকা না দিলে সামনে দাঁড়িয়ে থাকছে, যেতে দিচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে মানুষকে টাকা দিতে হচ্ছে। 

শহরের বড় মাঠ এলাকার পথচারী জয়নাল বলেন, বাসার বাজারের জন্য বের হয়েছিলাম। পথে হাতিটি এসে সামনে দাঁড়িয়ে গেল। হাতির পিঠে যে বসে আছে সে বলছে- সালামি দেন। পরে ৩০ টাকা দিলে আমার পথ ছেড়ে দেয়।

ওষুধ ব্যবসায়ী আরফান বলেন, সকালের দিকে হুট করে হাতিটা দোকানের সামনে হাজির। টাকা না দিলে হাতিটি দোকানের সামনে থেকে সরছিল না। তাই বাধ্য হয়ে ৫০ টাকা দিয়েছি।

হাতির পিঠে বসা মাহুত আল আমিন বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে ট্রাক-ট্যাংক লরি সমিতির ভোট হওয়ার কথা ছিল। ওই ভোটে একজন হাতি মার্কা নিয়ে প্রার্থী হয়েছিলেন। তিনি হাতি নিয়ে আসতে বলেছিলেন। কিন্তু করোনার কারণে ভোট স্থগিত হয়ে গেছে। এরপর আমিও যেতে পারিনি। 

তিনি আরও বলেন, হাতির খাওয়ার খরচ যোগাতে বিভিন্ন যানবাহন ও পথচারীদের কাছে কিছু করে নিই। এটা তো আর চাঁদা না। আমার হাতির উপকারের জন্য নিচ্ছি। সালামি বলতে পারেন এটাকে।

ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভিরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। এরপরও আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি শুনেছি। মাহুতকে হাতিটি নিয়ে শহরের বাইরে চলে যেতে বলেছি। 

নাহিদ রেজা/আরএআর