ভারত রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পরই চাঁপাইনবাবগঞ্জে ক্ষণে ক্ষণে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। এক দিনের ব্যবধানে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৯০ টাকা। খুচরা বাজারে এখন এই পেঁয়াজের কেজি ১৭০-২০০ টাকা। আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা। কেউ কেউ ২০০ টাকাও দাম হাঁকছেন।

শনিবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে জেলার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এ বাজারগুলোতে বিক্রি হওয়া সবই ভারতীয় পেঁয়াজ। কয়েকটি দোকান ছাড়া কোথাও দেশি পেঁয়াজের দেখা মেলেনি।

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, প্রতি ক্ষণে ক্ষণে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। এজন্য পাইকাররা দেশি পেঁয়াজ ছাড়ছেই না। বিকেল নাগাদ বাজারে পেঁয়াজের দাম আরও বাড়তে শুরু করেছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ঘোড়াস্ট্যান্ড এলাকা থেকে ভ্যান নিয়ে শিবগঞ্জ বাজারে দুই বস্তা পেঁয়াজ কিনতে এসেছেন জিয়াউল হক ও মাসুদ রানা নামে দুই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। পেঁয়াজ কিনে বিভিন্ন গ্রাম ও পাড়া-মহল্লায় বিক্রি করেন তারা। দুই ঘণ্টা ধরে বসে আছেন পেঁয়াজ কেনার জন্য। কিন্তু কোনো আড়তদার তাদের পেঁয়াজ দিচ্ছেন না। শেষ পর্যন্ত পেঁয়াজ না পেলে ফিরে যাবেন তারা।

মমিন নামের এক খুচরা বিক্রেতা ঢাকা পোস্টকে বলেন, বর্তমানে ভারতীয় পেঁয়াজ ১৮০ কেজি দরে বিক্রয় করা হচ্ছে। গতকাল ১০০-১২০ কেজি দরে বিক্রয় করেছি।

ঢাকা পোস্টকে ফারুক আহমেদ নামের এক ক্রেতা বলেন, গতকাল (শুক্রবার) ১০০ টাকা দরে এক কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ কিনেছি। আজ বাজারে সেই পেঁয়াজের দাম ১৯০-২০০ টাকা।

রাতারাতি পেঁয়াজের এমন দাম বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। বাজারে এসে অনেকে পেঁয়াজ না কিনে ফিরে যাচ্ছেন। অনেকে আবার বাধ্য হয়ে গলাকাটা দামেই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

শিবগঞ্জ বাজারের মেসার্স ফুরকুনি শস্যভান্ডারের প্রোপ্রাইটর জহরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বর্তমানে কয়েকটি কোয়ালিটির ভারতীয় পেঁয়াজ রয়েছে। প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১০০-১৬০ দরে পাইকারি বিক্রয় করা হচ্ছে। গত দুই দিন আগেও ৭০-৯০ কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রয় করা হয়েছে।

পানামা সোনামসজিদ পোর্ট লিংক লিমিটেডের পোর্ট ম্যানেজার মাইনুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে জানান, আজও ভারতীয় পেঁয়াজের ট্রাক স্থলবন্দরে প্রবেশ করেছে। তবে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বাড়তির বিষয়ে সঠিকভাবে কিছু বলতে পারেননি তিনি।

এ বিষয়ে সোনামসজিদ স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি সাহাবুদ্দিন ঢাকা পোস্টকে জানান, ভারতের দিল্লী থেকে একটি চিঠি এসেছে তাদের কাছে। এতে উল্লেখ্য আছে, আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি স্থগিত করা হয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় গেল বৃহস্পতিবার হঠাৎ করে ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করায় পেঁয়াজের দাম নিয়ে তুলকালাম শুরু হয়েছে।

এদিকে বাজার নিয়ন্ত্রণে এখনো কোনো প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি বলে অভিযোগ ভোক্তাদের।

বাজার নিয়ন্ত্রণে অভিযানের বিষয়ে জানতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাসুম আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এমজেইউ