রাবি শিক্ষার্থী ফুয়াদের মৃত্যুর রহস্য জানতে চায় পরিবার
ফুয়াদ আল খতিব
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ শামসুজ্জোহা হলে শিক্ষার্থী ফুয়াদ আল খতিবের মৃত্যুর ঘটনার রহস্য জানতে চায় তার পরিবার। গতকাল শনিবার (৯ ডিসেম্বর) বাড়ি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরেন ফুয়াদ। রোববার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে হল থেকে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সহপাঠীরা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
ফুয়াদ আল খতিবের বাড়ি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের ধোপাডাঙ্গা গ্রামে। তিনি চাপাদহ এতিমখানা দ্বিমুখী দাখিল মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট আমিনুল ইসলামের ছেলে।
বিজ্ঞাপন
ফুয়াদ আল খতিব রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ১৮৪ নম্বর সিঙ্গেল কক্ষে থাকতেন। তার মাস্টার্সের পরীক্ষা চলছে।
ফুয়াদ আল খতিবের আকস্মিক মৃত্যুর খবরে শোকে বিহবল মা-বাবাসহ পুরো পরিবার। তারা ফুয়াদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে চান।
বিজ্ঞাপন
ফুয়াদের চাচা গাইবান্ধা শহরের আদর্শ দ্বিমুখী আলিম মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট রুহুল আমিন বলেন, এ রকম আকস্মিক মৃত্যুরে খবরে আমরা উৎকণ্ঠার মধ্যে আছি। গতকালেই সে বাড়ি থেকে ফিরে গেছে। হঠাৎ সন্তানের মৃত্যুর খবরে ফুয়াদের বাবা-মা শোকে কাতর।
তিনি বলেন, ফুয়াদ শুক্রবার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বাড়িতে এসেছিল। পরীক্ষা দিয়ে পর দিন শনিবার দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে ফিরে যায়।
ধোপাডাঙ্গা গ্রামের ফুয়াদের এক বন্ধুর ম্যাসেঞ্জারে চ্যাটিংয়ের বরাত দিয়ে রুহুল আমিন বলেন, ফুয়াদ তার বন্ধুকে শনিবার রাত ১২টার দিকে ম্যাসেজের মাধ্যমে জানিয়েছে, তার (ফুয়াদের) প্রাইমারির নিয়োগ পরীক্ষা ভালো হয়েছে, ওই ম্যাসেজ আমি দেখেছি। ফুয়াদ বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে চ্যাটিং করেছিল।
তিনি বলেন, ফুয়াদ অত্যন্ত নরম এবং শান্ত স্বভাবের ছেলে। বাড়িতে এসে তার মাঝে কোনো অস্বাভাবিকতা আমরা দেখিনি। আত্মহত্যা করতে পারে এমন ঘটনা নেই, আর আছে বলে আমাদের মনেও হয় না। আমরা শুনেছি তার (ফুয়াদের) মুখ দিয়ে নাকি লালা-রক্ত পড়েছে, শরীর কালো হয়েছিল, বিষয়টি বুঝতেছি না। বিষয়টি নাকি তদন্ত হচ্ছে, আমরাও মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে চাই।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বাড়ি থেকে ফিরে রাতের খাওয়া-দাওয়া শেষে মশারি টানিয়ে নিজের সিঙ্গেল রুমে ঘুমিয়ে পড়েন ফুয়াদ। আগের দিন জার্নি করে ফেরায় সকালে তার রুমে তাকে কেউ ডাকতে যায়নি। পরে দুপুর পর্যন্ত ঘুম থেকে না উঠলে পাশের কক্ষের এক বন্ধু ডাকাডাকির পর সাড়া না পেয়ে শরীর ধরে নাড়া দেয়। এ সময় সে দেখে ফুয়াদের মুখ দিয়ে লালা পড়ছে এবং পুরো শরীর কালো হয়ে গেছে। পরে কয়েকজন বন্ধু মিলে বিকেল ৩টার দিকে অচেতন অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় সেখানকার দায়িত্বরত চিকিৎসকরা ফুয়াদ কয়েক ঘণ্টা আগে মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেন।
রিপন আকন্দ/আরএআর