কৃষক হলেও নেই কৃষি জমি, ‘গায়েবি দানের টাকায়’ করবেন নির্বাচন!
স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মজিদ
হলফনামায় পেশা উল্লেখ করেছেন কৃষিজীবী। কিন্তু তার কোনো কৃষি জমি নেই। কৃষি থেকে তার আয়ও নেই। কৃষি শ্রমিকও নন তিনি। সন্তানদের নামে জমি থাকার দাবি করেছেন। তবে তা উল্লেখ করেননি। মজার বিষয় হলো তিনি দানের টাকায় নির্বাচন করবেন। কিন্তু কে, কোন উৎস থেকে তাকে দান করবেন তা তিনি উল্লেখ করেননি।
বগুড়ায় তিনি নির্বাচন করতে চান জাতীয় পার্টির (জেপি) ব্যানারে। বাইসাইকেল প্রতীকে। এই প্রার্থীর নাম আব্দুল মজিদ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দুর্গ খ্যাত বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনে ভোট করার ঘোষণা দিয়েছেন মজিদ।
বিজ্ঞাপন
এবারে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া আব্দুল মজিদের হলফনামায় অনুযায়ী শাজাহানপুরের গণ্ডগ্রামের বাসিন্দা তিনি। স্থায়ী ঠিকানা বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে। এর আগে কখনো তিনি ভোটের মাঠে ছিলেন না। তবে বর্তমানে তিনি বগুড়া জেলা জেপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে রয়েছে। এর আগে তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদের নিয়ন্ত্রণাধীন জাতীয় পার্টির রাজনীতি করতেন। ১৯৯৬ সালে তিনি দলছুট আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর জেপিতে যোগ দেন।
আব্দুল মজিদ হলফনামায় এবারে তার আয়ের উৎস হিসেবে ঘোষণা দেন, কৃষিখাত, বাড়ি-দোকান ভাড়া, ব্যবসা, পেশা, চাকরি কিছু নেই। তার নির্ভরশীলদেরও এসব খাতে কোনো আয় নেই। শুধু অন্যান্য হিসেবে ৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা আয় দেখিয়েছেন। কিন্তু তা সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি।
বিজ্ঞাপন
হলফনামার অস্থাবর সম্পদের অংশে এই প্রার্থী তার নগদ এক লাখ ২০ হাজার টাকার কথা উল্লেখ করেছেন। স্বর্ণ আছে এক ভরি, তবে মূল্য জানেন না। ইলেকট্রনিক্স পণ্য ও আসবাবপত্র আছে ২ লাখ টাকার। স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের অস্থাবর কোনো সম্পদ নেই।
জেপি প্রার্থী আব্দুল মজিদের ঘোষণা দেন, তার কোনো কৃষি জমি নেই। অকৃষি, দালান, বাড়ি, পুকুর, বাগানের কোনো তথ্য নেই হলফনামায়। তার স্ত্রী ও নির্ভরশীলদেরও কোনো স্থাবর সম্পদ নেই।
হলফনামার আয়-ব্যয় ও নির্বাচনী ব্যয় বিবরণীতে দেখা গেছে, আব্দুল মজিদের বাৎসরিক আয় ৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা আর ব্যয় ২ লাখ ৩১ হাজার টাকা। নির্বাচনী কাজে আব্দুল মজিদ ৭ লাখ টাকা ব্যয়ের কথা জানিয়েছেন। এই অর্থ স্বেচ্ছায় প্রণোদিত দান ও গাছ বিক্রি থেকে প্রাপ্ত বলে মনোনয়নপত্রের নথিতে ঘোষণা দেন আব্দুল মজিদ। কিন্তু কে দান করছেন তার নাম উল্লেখ নেই।
জানতে চাইলে আব্দুল মজিদ বলেন, হলফনামায় আমার পেশা হিসেবে কৃষিজীবী উল্লেখ করেছি। কিন্তু আমার নিজের নামে কোনো জমি নেই। বাবার নামে আছে, ভাগবাটোয়ারা হয়নি। তবে আমার সন্তানের নামে জমি ক্রয় করেছি। কৃষি ছাড়া অন্য কোনো পেশা আছে কিনা প্রশ্নে জেপির এ প্রার্থী বলেন, আর কোনো পেশা থাকা না থাকার কোনো কথা কেন আসছে। হলফনামায় যেটা বলেছি ওটাই পেশা।
আসাফ-উদ-দৌলা নিওন/এএএ