রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের হাবাসপুর উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। রড ছাড়াই বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করার অভিযোগে বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) থেকে কাজ বন্ধ রয়েছে।

জানা গেছে, ৩৯ শতাংশ জমির ওপর বিদ্যালয়টি ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথমে একতলা ভবন থাকলেও ২০০৯-১০ অর্থবছরে একতলা ভবনটি দ্বিতল করা হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে শিক্ষক রয়েছে মোট ছয়জন। শিক্ষার্থী ১১৫ জন। প্রায় সপ্তাহখানেক আগে বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণকাজ শুরু হয়।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর পাংশা উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৪) আওতায় উপজেলার হাবাসপুর উত্তরপাড়া বিদ্যালয়ের বাউন্ডারি নির্মাণে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। অনুমোদিত প্রকল্পের প্রাক্কলিত মূল্য ধরা হয় ১২ লাখ ৯৫ হাজার ২২৩ টাকা। কাজটি করছেন মেসার্স ওদুদ মন্ডল নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। তিনি পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সপ্তাহখানেক আগে নির্মাণকাজ শুরু করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, গত বুধবার সকালে সীমানা প্রাচীরের কলামের ভিত্তির ঢালাইয়ের কাজ শুরু করা হয়। ভিত্তির ঢালাইয়ের শুরুতে রড দিয়ে খাঁচা বা অবকাঠামো তৈরি করার কথা থাকলে রড ছাড়াই শুধু ইট, বালু, সিমেন্ট ও খোয়া দিয়ে ঢালাই দেওয়া হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান নিজেই ঠিকাদার হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি। পরে বিষয়টি জানতে পেরে উপজেলা প্রকৌশলী সেখানে উপস্থিত হয়ে ঘটনার সত্যতা পান এবং নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, সীমানা প্রাচীরের বেইজ ঢালাইয়ের জন্য বিদ্যালয়ের চারপাশে ৪৩টি গর্ত খোঁড়া হয়েছে। গর্তের ভেতর ইট, বালু ও সিমেন্টের কংক্রিট পড়ে আছে। কোনো রড দেখা যায়নি।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এমদাদুল হক বলেন, সপ্তাহখানেক আগে আমাদের বিদ্যালয়ের কাজ শুরু করা হয়। বুধবার সকালে বেইজ ঢালাই দেওয়া হয়। কিন্তু কিছু সময় পরে এলজিইডি থেকে অফিসাররা স্কুলে আসেন। এরপর কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু কি কারণে বা কেন বন্ধ করে দিয়েছে তা কিছু জানি না।

পাংশা উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, কাজের ক্ষেত্রে কিছু অনিয়ম ছিল। বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। এরপর থেকে কাজ বন্ধ রয়েছে।

পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, অনিয়মের বিষয়টির প্রমাণ পাওয়ায় কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। নির্মাণকাজে অনিয়ম করার কোনো সুযোগ নেই।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ফরিদ হাসান ওদুদ বলেন, আমার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নিয়ে যুবলীগের এক কর্মী কাজ করছে। কাজের অনিয়মের বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি অনিয়ম হয়ে থাকে তবে নিয়ম মেনে কাজ করতে তাকে বলা হয়েছে।

মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/আরকে