লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম ফারুক পিংকুর নৌকা প্রতীকের পক্ষে করা মিছিল থেকে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এসময় ‌‘নৌকার বিরোধীরা হুঁশিয়ার-সাবধান’ স্লোগানও ভেসে আসে মিছিল থেকে। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা এমএ সাত্তার (ট্রাক প্রতীক)  প্রায় ২ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে মিছিল করেন। এতে ঘণ্টাব্যাপী মান্দারী বাজারে যান চলাচল বন্ধ ছিল। প্রতীক পেয়েই প্রচারণার প্রথম দিনে নৌকা-স্বতন্ত্র প্রার্থীরা যেন ‘শক্তির মহড়া’ দেখিয়েছেন।

সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে মান্দারী বাজারে এ ঘটনা ঘটে। নৌকার প্রার্থী পিংকু জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ট্রাকের প্রার্থী সাত্তার রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি।

প্রসঙ্গত, সংসদ নির্বাচনী আচরণবিধির ১১ ধারায় উল্লেখ রয়েছে, প্রার্থী কিংবা তার পক্ষে কেউ উসকানিমূলক বক্তব্য বা বিবৃতি প্রদান, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ বা বিস্ফোরক বহন নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন।  

সরেজমিনে দেখা যায়, নৌকার পক্ষে চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাবের নেতৃত্বে প্রায় দেড় শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি মান্দারী বাজার চৌরাস্তা থেকে শুরু হয়ে বাজার প্রদক্ষিণ করে পুনরায় একই স্থানে এসে সভায় মিলিত হয়। নেতাদের বক্তব্য চলাকালে লক্ষ্মীপুর-ঢাকা আঞ্চলিক সড়কে কর্মীদের জটলা তৈরি হওয়ায় যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সভা শেষ না হতেই শ্যামলি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে প্রায় ২ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী এমএ সাত্তার মিছিল বের করেন। মিছিলটি বাজার প্রদক্ষিণের একপর্যায়ে বাজারের ভেতরেই অবস্থান নেয়। এতে বাজারে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। আওয়ামী লীগের সভা শেষে মান্দারী বাজার চৌরাস্তায় এমএ সাত্তার বক্তব্য দেন। এতে একইভাবে লক্ষ্মীপুর-ঢাকা আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন রুবেল পাটওয়ারী ও চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু তালেব মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন।

চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাব বলেন, কিছু নেতাকর্মী ককটেল ফাটিয়েছেন। উচ্ছৃঙ্খল স্লোগানও দিয়েছেন। আমরা তাদেরকে নিষেধ করেছি। ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটবে না।

লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান বলেন, ঘটনাগুলো কেউ আমাকে জানায়নি। ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় খোঁজ নেওয়া হবে। আচরণবিধি নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটরা কাজ করছেন। এসব বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলব।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ আসনে পিংকু ও সাত্তার ছাড়াও আরও ৪ জন প্রার্থী ভোটের মাঠে রয়েছেন। তারা হলেন— জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ রাকিব হোসেন (লাঙ্গল), বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির মাহাবুবুল করিম টিপু (হাতুড়ি), তৃণমূল বিএনপির মো. নাইম হাসান (সোনালি আঁশ), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির আবদুর রহিম (কাঁঠাল)। 

১২টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এ আসনটিতে ১২৫টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। এখানে ৪ লাখ ৩ হাজার ৭৪৩ জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে ২ লাখ ৯ হাজার ৯০ জন পুরুষ, ১ লাখ ৯৪ হাজার ৬৫২ নারী ও একজন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে।

হাসান মাহমুদ শাকিল/এমএ