গৃহহীনদের ঘর দেওয়ার নামে টাকা নিয়েছেন আ.লীগ নেতার স্ত্রী
পাবনার সাঁথিয়ায় এক আওয়ামী লীগ নেতার স্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর উপহার গৃহহীনদের ঘর দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়ার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এ নিয়ে সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু দাউদ নান্নুকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার করমজা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু দাউদ নান্নুর স্ত্রী মেরিনা আকতার একই গ্রামের ফজরের স্ত্রী মমতাজের কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার গৃহহীনদের ঘর দেওয়ার কথা বলে তিন মাস আগে পাঁচ হাজার টাকা নেন। পরবর্তীতে মমতাজ যখন লটারিতে ঘর পান তখন খবর পেয়ে তিনি তাকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। মমতাজ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে মেরিনা বলেন, আগামী সাতদিনের মধ্যে যদি বাকি ৫০ হাজার টাকা না দাও তবে ঘর দেওয়া হবে না।
বিজ্ঞাপন
এ নিয়ে গত রোববার (১১ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী মমতাজ। অভিযোগ পাওয়ার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম জামাল আহমেদ তদন্তে নেমে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) সাঁথিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় প্যাডে বিষয়টি নিয়ে করমজা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু দাউদ নান্নুকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, মুজিব শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার গৃহহীনদের ঘর দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়ার অভিযোগ ও আর টাকা না দিলে হুমকির বিষয় নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতার নিকট অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী। এতে দলের আদর্শ ও সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। এ অবস্থায় আপনার বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না- এই মর্মে পত্র প্রাপ্তির ১৫ দিনের মধ্যে মতামত জানানোর জন্য বলা হলো।
বিজ্ঞাপন
ভুক্তভোগী মমতাজ জানান, ঘটনার পরদিন আওয়ামী লীগ নেতা আবু দাউদ নান্নুর স্ত্রী মেরিনা আকতার তার বাড়িতে গিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন এবং তার থেকে নেয়া পাঁচ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন। বলেছেন আর কোনো টাকা পয়সা দিতে হবে না ।
সাঁথিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ দেলোয়ার ঢাকা পোস্টকে বলেন, টাকা নেওয়ার বিষয়টি বিভিন্ন মহলে জানাজানি হলে আমাদের নজরে আসে। যার কারণে দলের মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। ঘর দেওয়ার নামে টাকা আদায় করা এটা মারাত্মক অপরাধ। সেই জন্য তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। জবাব না দিলে দলীয়ভাবে অন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম জামাল আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভুক্তভোগী অভিযোগ জানানোর পর মাঠে নেমে তদন্ত করে বিষয়টির সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে এখনও বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষ হলে আপনাদের পুরোপুরি জানাতে পারব।
রাকিব হাসনাত/আরএআর