নাটোরে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ-গুলি, আহত ৪
নাটোরে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতিসহ চারজন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরহাদ এবং সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শাহীনের নেতৃত্বে জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিতে গেলে সেখানে আগে থেকে অবস্থান নেওয়া ছাত্রলীগের অপর পক্ষ তাদের ধাওয়া করে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ এবং পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরহাদ বিন আজিজ, রাহুল খান হীরা, রোকনুজ্জামন এবং আফজাল আহত হন।
বিজ্ঞাপন
নাটোর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরহাদ বিন আজিজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, জেলা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে নির্মিত বঙ্গবন্ধুর বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং জাতীয় পতাকা উত্তোলনের কর্মসূচি পালন করতে গেলে শিমুল এমপির (শফিকুল ইসলাম শিমুল) সমর্থক পদবিহীন ছাত্রলীগের কর্মীরা আমাকে এবং সেক্রেটারিকে পার্টি অফিসে ঢুকতে বাধা দেয় এবং হামলা করে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
অন্যদিকে নাটোর সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ও শফিকুল ইসলাম শিমুল এমপির অনুসারী হিসেবে পরিচিত সোহানুর রহমান সাকিব জানান, ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নেতাকর্মীদের নিয়ে তারা আওয়ামী লীগ দলীয় অফিসে কেক কাটেন ও পতাকা উত্তোলন করে কর্মসূচি পালন করেন। এরপর তারা নবাব সিরাজউদ্দৌলা কলেজের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য বের হওয়ার সময় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরহাদ বিন আজিজ এবং সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শাহিনের নেতৃত্বে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। ওই সময় জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ফরহাদ বিন আজিজ ৩-৪ রাউন্ড গুলি চালায়। ফরহাদের ছোঁড়া গুলিতে জাহাঙ্গীর আহত হয়।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শাহীন বলেন, ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান করতে গেলে পার্টি অফিসে আমাদের ঢুকতে বাধা দেয় এমপি শিমুলের সমর্থিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তারা আগে থেকেই পার্টি অফিসে হকিস্টিক ও লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান নেয়। আমরা ঢুকতে চাইলে আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ ৩ জনকে পিটিয়ে আহত করে।
গুলি করার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমাদের কাছে একটি কলমও ছিল না। সুতরাং গুলি করার প্রশ্নই ওঠে না। সেখানে পুলিশ-প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন ছিল। তারা সঠিকটা বলতে পারবে।
এ বিষয়ে নাটোর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ সকালে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সেখানে আগে থেকেই পুলিশ মোতায়েন করা ছিল। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে পড়ে গিয়ে তিনজন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় তিন রাউন্ড গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ গুলির খোসা উদ্ধার করেছে। তবে কেউ গুলিবিদ্ধ হয়েছে এমন তথ্য পুলিশের কাছে নেই। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
গোলাম রাব্বানী/এমজেইউ