খুলনার ছয়টি আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। রোববার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৮ টা থেকে সারাদেশের মতো খুলনার ছয়টি আসনেও শুরু হয় এই ভোটগ্রহণ।

শীত ও কুয়াশা উপেক্ষা করে সকাল থেকেই কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছেন ভোটাররা। তবে ভোটার উপস্থিতি কম রয়েছে। নির্বিঘ্নে ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে পেরে খুশি ভোটাররা।

এবারের নির্বাচনে খুলনার ৬টি আসনে ১১টি রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩৯ প্রার্থী। এরমধ্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন ১০ জন। তাদের মধ্যে নারী প্রার্থী দুজন।

খুলনা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, রোববার ভোর থেকে কেন্দ্রগুলোতে পাঠানো হয়েছে ব্যালট পেপার। এরআগে খুলনা সার্কিট হাউজ থেকে শনিবার বেলা ১১টায় খুলনা ২ ও ৩ আসনের ব্যালট বাক্সসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম ভোট কেন্দ্রগুলোতে পাঠানো হয়।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন জানান, সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ভোটকেন্দ্রসহ গোটা জেলাজুড়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ভোটকেন্দ্রসহ গোটা জেলার নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করবেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর প্রায় ১৭ হাজার সদস্য। নির্বাচনে জেলা পুলিশের ২ হাজার ১৪২ জন, মেট্রোপলিটন পুলিশের ৩ হাজার ৮৩ জন, ৯ হাজার ৫৮৮ জন আনসার, র‌্যাবের ৯৬ জন, দাকোপ উপজেলা ও কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নে কোস্টগার্ডের ৫৯৬ জন, ১৯ প্লাটুন বিজিবি, সেনাবাহিনীর ৬০০ জন ও নৌ পুলিশের ১৩ জন দায়িত্ব পালন করছেন।

খুলনার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফারাজী বেনজীর আহমেদ জানান, নির্বাচনের দিন ৭৯৩ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৪ হাজার ৭২০ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও ৯ হাজার ৪৪০ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করছেন। খুলনার ছয়টি আসনে সবমিলিয়ে ১৪ হাজার ৯৫৩ জন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করছেন।
এবারের নির্বাচনে খুলনার ৬টি আসনে মোট ভোটার ১৯ লাখ ৯৯ হাজার ৮৮২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ লাখ ৮৪ জন এবং নারী ভোটার ৯ লাখ ৯৯ হাজার ৭৯৮ জন। ভোটগ্রহণ শেষে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হবে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে।

যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন:

এবারের নির্বাচনে খুলনার ছয়টি আসনে ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরমধ্যে খুলনা-১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ননী গোপাল মণ্ডল; প্রতীক ‘নৌকা’, জাতীয় পার্টির প্রার্থী কাজী হাসানুর রশিদ ‘লাঙ্গল’, তৃণমূল বিএনপির চন্দ্র প্রামানিক ‘সোনালী আঁশ’ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রশান্ত কুমার রায় ‘ঈগল’ প্রতীকে লড়ছেন।

খুলনা-২ (সদর-সোনাডাঙ্গা) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ সালাহউদ্দিন ‘নৌকা’, জাতীয় পার্টির মো. গাউসুল আজম ‘লাঙ্গল’, বাংলাদেশ কংগ্রেসের দেবদাস সরকার ‘ডাব’, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (মুক্তিজোট) বাবু কুমার রায় ‘ছড়ি’, গণতন্ত্রী পার্টির মতিয়ার রহমান ‘কবুতর’, বিএনএম প্রার্থী মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন ‘নোঙর’ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সাঈদুর রহমান ‘ঈগল’ প্রতীকে লড়ছেন।

খুলনা-৩ (দৌলতপুর-খালিশপুর-খানজাহান আলী) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এস এম কামাল হোসেন ‘নৌকা’, জাতীয় পার্টির মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন ‘লাঙ্গল’, জাকের পার্টির এসএম সাব্বির হোসেন ‘গোলাপ ফুল’ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ফাতেমা জামান সাথী ‘ঈগল’।

খুলনা-৪ (রূপসা-তেরখাদা-দিঘলিয়া) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুস সালাম মুর্শেদী ‘নৌকা’, স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম মোর্ত্তজা রশিদী দারা, জাতীয় পার্টির মো. ফরহাদ আহমেদ ‘লাঙ্গল’, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান ‘আম’, তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান ‘সোনালী আঁশ’, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মনিরা সুলতানা ‘ডাব’, ইসলামী ঐক্যজোটের রিয়াজ উদ্দীন খান ‘মিনার’, বিএনএম প্রার্থী এস এম আজমল হোসেন ‘নোঙর’, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জুয়েল রানা ‘ট্রাক’, স্বতন্ত্র প্রার্থী এমডি এহসানুল হক ‘সোফা’, স্বতন্ত্র প্রার্থী এইচএম রওশন জামির ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. রেজভী আলম ‘ঈগল’।

খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ‘নৌকা’, স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আকরাম হোসেন ‘ঈগল’, জাতীয় পার্টির মো. শাহীদ আলম ‘লাঙল’, বাংলাদেশ কংগ্রেসের এসএমএ জলিল ‘ডাব’ ও বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির শেখ সেলিম আকতার ‘হাতুড়ি’।

এছাড়া খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনে আওয়ামী লীগের মো. রশীদুজ্জামান ‘নৌকা’, জাতীয় পার্টির মো. শফিকুল ইসলাম মধু ‘লাঙ্গল’, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মো. আবু সুফিয়ান ‘আম’, বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মির্জা গোলাম আজম ‘ডাব’, বিএনএম প্রার্থী এস এম নেওয়াজ মোরশেদ ‘নোঙর’, তৃণমূল বিএনপির মো. নাদির উদ্দিন খান ‘সোনালী আঁশ’ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জি এম মাহবুবুল আলম ‘ঈগল’ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মোহাম্মদ মিলন/টিএম