‘নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা বন্ধ না হলে আ.লীগের মধ্যে গৃহযুদ্ধ হবে’
মেহেরপুর-১ আসনের পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, মেহেরপুর-১ আসনের নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর থেকে বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের ওপর হামলা ও বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে নৌকা সমর্থিত নেতাকর্মীরা। নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা চলছেই। পুলিশও অনেকটা নিরুপায় হয়ে পড়েছে নৌকার পক্ষের হামলাকারীদের রুখতে। এই সহিংসতা বন্ধ না হলে আওয়ামী লীগের মধ্যেই গৃহযুদ্ধ শুরু হবে।
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে মেহেরপুর শহরের নিজ বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
লিখিত বক্তব্যে প্রফেসর আবদুল মান্নান বলেন, বিজয়ী প্রার্থী প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন নির্বাচনের পূর্ব থেকেই নেতাকর্মীদের শয়তান বলে আখ্যা দিয়ে উসকানি দিয়ে রেখেছেন। গতকাল রাতে বাগোয়ান গ্রামে নৌকার পক্ষের লোকজন সংঘর্ষসহ বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে। এ হামলায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর অন্তত ৩০ জন কর্মী আহত হয়েছে। শুধু বাগোয়ান গ্রামেই নয়, বিভিন্ন গ্রামে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা বাড়িঘরে ভাঙচুর করা হয়েছে। বিজয়ী প্রার্থী ফরহাদ হোসেন এখনও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকায় সহিংসতা দমনে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে পুলিশ। এতে প্রতিটি গ্রামে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তায় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন পরাজিত প্রার্থী আবদুল মান্নান।
নির্বাচন সুষ্ঠু ও ফলাফল নিয়ে মন্তব্য করে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ৮ থেকে ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়। ভোটগ্রহণ বন্ধের ঠিক ৪টা ১৯ মিনিটে সুবিদপুর নামক একটি কেন্দ্রের ফলাফল পেয়ে যায়। এতেই কি মনে হয় না ভোট গণনা যথারীতি না করে ফল দেওয়া হয়েছে। আমরা সবাই জননেত্রী শেখ হাসিনার কর্মী। জননেত্রী শেখ হাসিনাকে মান্যতা দেওয়ায় আমরা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। আমরা চেষ্টা করেছি নির্বাচনের ফল যাই হোক সুষ্ঠু, সুন্দর, গ্রহণযোগ্য এবং আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন করতে। কিন্তু যখন ১৯ মিনিটের মধ্যে নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হয়, তখন মনে রাখতে হবে, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে সবকিছুই সাজিয়ে রেখেছিলেন। সেই সজ্জার ভেতর থেকে আমরা বের হতে পারিনি। সেজন্য পরাজিত আমি হয়নি। পরাজিত হয়েছে আওয়ামী লীগ।
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মেহেরপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রসুল, মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মিয়াজান আলী ও আব্দুল মান্নান (ছোট), জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মোখলেছুর রহমান খোকন, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক হাসানুজ্জামান মালেক, মেহেরপুর পৌর মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটসহ নেতারা।
উল্লেখ্য, মেহেরপুর-১ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের বিবাদমান দুই পক্ষ এবার নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনী লড়াই করে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বিপুল ভোটে তৃতীয়বারের মতো জয়লাভ করেছেন।
আকতারুজ্জামান/আরকে