জামানত হারোনো দুই এমপি রেজাউল করিম ও নুরুল ইসলাম তালুকদার

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়ায় ভোটের মাঠে নেমেছিলেন ৫৮ প্রার্থী। সাত প্রার্থী জয়ের মালা গলায় পড়েছেন। পরাজিতদের মধ্যে ছয়জন বাদে বাকি ৪৫ প্রার্থীই তাদের জামানত হারালেন। যার মধ্যে রয়েছেন দুজন সাবেক সংসদ সদস্য।

নির্বাচন কমিশনের বিধি অনুযায়ী, মোট প্রাপ্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগেরও কম ভোট পেলে প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। বগুড়ার ৭টি আসনে ৪৫ জন প্রার্থী সেই ভোট পাননি।

বগুড়া জেলা রিটার্নিং কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে বগুড়ায় মোট প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ৮ লাখ ৪৩ হাজার ৫৭০টি। এ হিসাবে জেলায় মোট ২৯ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট প্রয়োগ হয়েছে। এর মধ্যে মোট বাতিল ভোটের সংখ্যা ২৪ হাজার ৫০৬টি।

নির্বাচনে বগুড়ার সাতটি সংসদীয় আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৫৮ জন। ভোটের ফলাফলে চারটিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। একটিতে মহাজোটের শরিক জাসদের প্রার্থী নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়লাভ করেন। বাকি দুটির একটিতে লাঙ্গল, অন্যটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।

পরাজিতদের মধ্যে দুজন ছিলেন সংসদ সদস্য। তারা হলেন, বগুড়া-৩ (আদমদীঘি ও দুপচাঁচিয়া) আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম তালুকদার এবং বগুড়া-৭ (গাবতলী ও শাজাহানপুর) আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম। এর মধ্যে নুরুল ইসলাম তালুকদার পেয়েছেন ১০ হাজার ৫২৩ ভোট। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ৭ ভোট।

বগুড়া-১ আসনে জামানত হারানো সাত প্রার্থী হলেন- জাতীয় পার্টির গোলাম মোস্তফা বাবু (লাঙ্গল), তৃণমূল বিএনপির এনএম আবু জিহাদ (সোনালী আঁশ), বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের আনোয়ার হোসেন (ফুলের মালা), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নজরুল ইসলাম (বটগাছ), জাসদের হাসান আকবর আফজাল (মশাল), স্বতন্ত্র ইয়াসির রহমতুল্লাহ ইন্তাজ (ট্রাক) ও স্বতন্ত্র মো. শোকরানা (কেটলি)।

বগুড়া-২ আসনে জামানত হারানো পাঁচজন হলেন- বিএনএফের বরকত উল্লাহ (টেলিভিশন), তৃণমূল বিএনপির বজলুর রহমান (সোনালী আঁশ), বাংলাদেশ কংগ্রেসের মুনছুর রহমান শেখ (ডাব), স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগ) আকরাম হোসেন (কাঁচি) ও স্বতন্ত্র আল ফারাবী মো. নুরুল ইসলাম (বেঞ্চ)।

বগুড়া-৩ আসনে সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম ছাড়া জামানত হারানো বাকি ৯ জন হলেন- বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির আফরিনা পারভীন (একতারা), তৃণমূল বিএনপির আবদুল মোত্তালেব (সোনালী আঁশ), জাসদের আবদুল মালেক সরকার (মশাল), বাংলাদেশ কংগ্রেসের তাজ উদ্দীন মন্ডল (ডাব), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের রফিকুল ইসলাম সরদার (নোঙ্গর), স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগ) ফেরদৌস স্বাধীন ফিরোজ (ঈগল), স্বতন্ত্র আফজাল হোসেন (ফুলকপি), স্বতন্ত্র জাকরিয়া হোসেন (আলমিরা) ও স্বতন্ত্র নজরুল ইসলাম (কেটলি)।

বগুড়া-৪ আসনে জামানত হারানো চারজন হলেন- বাংলাদেশ কংগ্রেসের আশরাফুল হোসেন আলম (ডাব), জাতীয় পার্টির শাহীন মোস্তফা কামাল (লাঙ্গল), গণতন্ত্র পার্টির মনজুরুল ইসলাম (কবুতর) ও স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগ) মোশফিকুর রহমান (ট্রাক)।

বগুড়া-৫ আসনে জামানত হারানো চারজন হলেন- জাসদের রাসেল মাহমুদ (মশাল), বিএনএফের আলী আসলাম হোসেন রাসেল (টেলিভিশন), ইসলামী ঐক্যজোটের নজরুল ইসলাম (মিনার) ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের মামুনার রশিদ (ডাব)।

বগুড়া-৬ আসনে জামানত হারানো তিনজন হলেন- জাতীয় পার্টির আজিজ আহম্মেদ (লাঙ্গল), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শহিদুল ইসলাম (আম) ও স্বতন্ত্র সৈয়দ কবির আহম্মেদ (ঈগল)।

সাবেক এমপি রেজাউল করিম ছাড়া বগুড়া-৭ আসনে জামানত হারানো বাকি ১১ প্রার্থীরা হলেন- জাতীয় পার্টির এটিএম আমিনুল ইসলাম (লাঙ্গল), বাংলাদেশ কংগ্রেসের মেহেরুল আলম মিশু (ডাব), জাসদের আবদুর রাজ্জাক (মশাল), জাতীয় পার্টির (জেপি) আবদুল মজিদ (বাই-সাইকেল), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের এনামুল হক (ছড়ি), ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টির ফজলুল হক (আম), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মো. রনি (নোঙ্গর), স্বতন্ত্র নজরুল ইসলাম (কেটলি), নজরুল ইসলাম মিলন (কাঁচি), রেজাউল করিম বাবলু এমপি (ট্রাক), আমজাদ হোসেন (চার্জার লাইট) ও সরকার বাদল (ঈগল)।

আসাফ-উদ-দৌলা নিওন/এমজেইউ