কুয়াকাটায় পুলিশের হাতে সাংবাদিক লাঞ্ছিত, তদন্ত কমিটি গঠন
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় কর্মরত মানবজমিন ও বিজয় টিভির প্রতিনিধি এবং কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের অর্থ সম্পাদক হোসাইন আমিরকে মহিপুর থানা পুলিশ কর্তৃক মারধরের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটি আগামী তিনদিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ পাঠাবেন। পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইদুল ইসলাম বিপিএম, পিপিএম সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে এমনটি আশ্বস্ত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জুবায়ের আহমেদের নেতৃত্বে এ তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছে। পুলিশ সুপারের সঙ্গে কুয়াকাটা, মহিপুর ও পটুয়াখালী জেলায় কর্মরত সিনিয়র সাংবাদিকদের বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যায় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ছবি এবং ভিডিও চিত্র ধারণ করার সময় মহিপুর থানা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর আব্দুর রব, কনস্টেবল আজিজ ও আল আমিন কর্তব্যরত সাংবাদিক হোসাইন আমিরকে মারধর ও টেনেহেচড়ে পুলিশ ভ্যানে নিয়ে যায়। সেখানে দ্বিতীয় দফায় ওসি আনোয়ার হোসেন তালুকদার কর্তৃক হেনস্তার শিকার হয়। এ সময় সাংবাদিক হোসাইন আমিরকে পুলিশ ভ্যানে তুলে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এ ঘটনা জানাজানি হলে কুয়াকাটা মহিপুর এলাকায় কর্মরত সংবাদ কর্মীরা থানায় ছুটে যায়। সেখানে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় হোসাইন আমিরকে অহেতুক মারধর ও হেনস্তার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে উঠে আসে। মহিপুর থানা পুলিশের ওসি আনোয়ার হোসেন তালুকদার নানা কৌশলে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে দুঃখ প্রকাশ করেছেন বলে উপস্থিত সাংবাদিকরা জানিয়েন।
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মহিপুর থানার ওসির অপসারণ এবং দোষীদের বিচার দাবি করে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করে কুয়াকাটা প্রেসক্লাব। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরে বৃহস্পতিবার সকালে পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার জেলার সিনিয়র সাংবাদিকদের সমন্বয়ে বেলা ১১টায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক বৈঠকে বসেন।
বৈঠকে পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া হৃদয়, পটুয়াখালী টেলিভিশন জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি কাজল বরণ দাস ও সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম প্রিন্স, পটুয়াখালী জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম আরিফসহ নেতৃবৃন্দ, কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি নাসির উদ্দিন বিপ্লব ও সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মিরন, কুয়াকাটা টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি আনোয়ার হোসেন আনু ও সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুল ইসলামসহ কুয়াকাটা, মহিপুর ও পটুয়াখালীর বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় পুলিশ সুপার মো. সাইদুল ইসলাম বিপিএম, পিপিএম বার, সাংবাদিকদের অভিযোগ শুনেন এবং গঠিত তদন্ত কমিটির মাধ্যমে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাপক গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।
এসএম আলমাস/এমএএস