ফেনীতে লুট হওয়া ১১ ভরি স্বর্ণসহ গ্রেপ্তার ৬
ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নে একটি দোকানে স্বর্ণ লুটের ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১১ ভরি ৪ আনা স্বর্ণালংকার ও এক লাখ ৮ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
রোববার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ফেনী পুলিশ সুপার জাকির হাসান।
বিজ্ঞাপন
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর মুকসাইর গ্রামের মো. আলাউদ্দিন (৩০), চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা পীরখাইন এলাকার মো. ফরহাদ (৩৯), একই জেলার বাকুলিয়া কালামিয়া বাজারের মো. বাদশা চৌধুরী (২৩), কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার কামাল্লা গ্রামের মো. সজিব প্রকাশ প্রকাশ শুক্কুর (২৬), একই জেলার মুরাদনগর মোল্লাপাড়ার মো. মিজান (২৮) এবং দেবিদ্বার পান্নারপুল এলাকার মো. শফিক সোহেল প্রকাশ দাঁতলা শফিক (৩২)।
পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, সিসি টিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায় গ্রেপ্তারকৃত আসামি ফরহাদ ও বাদশা অন্যান্য দুই পলাতক আসামিসহ ঘটনার আগের দিন (১০ জানুয়ারি) ফাজিলপুর বাজারে এসে দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করে দুপুরে দোকান বন্ধ করা ও পুনরায় খোলার সময় পর্যবেক্ষণ করে। এদিন দুপুরের খাবার শেষে মালিক দোকান খোলার পর চক্রের ৪ জন আলাদিন জুয়েলার্সে ক্রেতা সেজে ঢুকে। তখন আসামি ফরহাদ দোকান মালিকের সঙ্গে দরদাম করে ১২০০ টাকা দিয়ে একটি নাক ফুল কেনেন ওই সময় ভেতরে থাকা অন্য ৩ জন দোকানের স্বর্ণালংকার কোথায় আছে ও ভিতরে শাটার কেটে সহজে কোন পথে প্রবেশ করা যায় তা দেখেন। আলাদিন জুয়েলার্সের পাশের গলি, সেলুনসহ সামনের পথ, সবজির দোকান কিভাবে পাহারা দিতে হবে এবং চুরি করে কোন পথে সহজে বের হয়ে পালানো যাবে সেই পথ বাছাই করে নেয়।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ সুপার বলেন, পরিকল্পনা মোতাবেক পরের দিন ১১ জানুয়ারি দুপুরে আলাদিন জুয়েলার্স বন্ধ করে মালিক বাড়ি যাওয়ার পর চক্রের প্রধান বাদশার নেতৃত্বে যে যার মত অবস্থান নেয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামি আলাউদ্দিন দোকানের তালা কাটে, অন্যান্য আসামি গলির পথে পাহারায় থাকে, শফিক ব্যাগ নিয়ে দোকানে প্রবেশ করে স্বর্ণালংকার চুরি করে ব্যাগে ভরে পালিয়ে যায়। এ সময় তারা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে ফাজিলপুর বাজার থেকে মহাসড়কে আসে। সেখান থেকে ফেনী হয়ে বাসযোগে তারা কুমিল্লায় পালিয়ে যায়।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, তথ্য প্রযুক্তি ও ম্যানুয়াল সোর্সিংয়ের মাধ্যমে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা থানা, বাকুলিয়া থানা, কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর, হোমনা, দেবিদ্বারসহ অন্যান্য এলাকা থেকে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় লুট হওয়া ৭৫ ভরি স্বর্ণের মধ্যে ১১ ভরি ৪ আনা ও নগদ ১ লাখ ৮ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে এ ঘটনায় মোট ১২ জনের জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, দেশের বিভিন্ন থানায় গ্রেপ্তারকৃত আসামি আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে ৭টি, মো. শফিকের বিরুদ্ধে ১৩টি, মো. বাদশার বিরুদ্ধে ৭টি, মো. ফরহাদের বিরুদ্ধে ৫টি, মো. সুমন প্রকাশ শুক্কুরের বিরুদ্ধে ৬টি ও মো. মিজানের বিরুদ্ধে ৩টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মুহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থোয়াই অংপ্রু মারমা, ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরীসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১১ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) দুপুরে ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুরে ইউনিয়নের রহিম উল্ল্যাহ সাহেবের বাজারে আলাদিন জুয়েলার্সে এ ঘটনা ঘটে।
তারেক চৌধুরী/এএএ