অনুকূল আবহাওয়া, স্বল্প খরচ, কম পরিশ্রম ও বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় ঠাকুরগাঁও‌য়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সরিষা চাষ। জেলার পাঁচ‌টি উপজেলায় গত পাঁচ বছরের তুলনায় চলতি মৌসু‌মে সরিষার আবাদ বেড়েছে ৫৪ শতাংশ।

কৃষি বিভাগ বলছে, চলতি বছর জেলায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে সরিষার আবাদ হ‌য়েছে। বাজারে শর্ষের তেলের চাহিদা বেশি থাকায় গত বছরের চেয়ে এ বছর জেলায় অন্তত ৩ হাজার ৮৬৭ হেক্টরের বেশি জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জেলায় ২০১৯-২০ র‌বি মৌসুমে সরিষার আবাদ হ‌য়ে‌ছিল ১২ হাজার ৮২০ হেক্টর জ‌মি‌তে। এ পরিমাণ জ‌মি‌ থে‌কে স‌রিষা উৎপাদন হয় ২২ হাজার ৩৩৩ টন। ২০২১ মৌসুমে চাষ হয়েছিল ১২ হাজার ৬৩৬ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন হয়েছিল ১৯ হাজার ৬৯৮ টন। ২০২২ মৌসুমে চাষ হয়েছিল ১৩ হাজার ৩৭৪ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন ছিল ২১ হাজার ১৭২ টন। ২০২৩ মৌসুমে চাষ হয়েছিল ১৫ হাজার ৯২৩ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন হ‌য় ২৪ হাজার ২০৩ টন। চলতি র‌বি মৌসু‌মে আবাদ হ‌য়ে‌ছে ১৯ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে। এ থে‌কে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩০ হাজার ৬৭৪ টন।

সদর উপ‌জেলার গড়েয়া ইউনিয়নের মিলনপুর গ্রা‌মের চাষি জা‌হিদুল ইসলাম, শ‌ফিকুল ও রাহাত আলীসহ কয়েকজন জানান, বোরো ধান রোপণের আগেই কম সময়ে সরিষার ফসল ঘরে তোলা যায়। তাই বাড়তি ফসল হি‌সে‌বে তারা সরিষার আবাদ কর‌ছেন।

একই গ্রামের সা‌দেকুল ইসলাম বলেন, এক বিঘা খে‌তে সরিষা বিক্রি করলে প্রায় ২৪ থেকে ২৫ হাজার টাকা আয় হয়। এ পরিমাণ জমিতে সরিষা আবাদে খরচ হয় ৪ থে‌কে ৫ হাজার টাকা। তাই সরিষা আবাদ করে আমরা লাভবান হচ্ছি।

হ‌রিপুর উপ‌জেলার আমগাঁও ইউনিয়নের কৃষক রা‌জন রায় বলেন, এবার দুই বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। বেশ ভালো ফুল ধরেছে। আশা করা যায় ফলন ভালো হবে।

ঠাকুরগাঁও কৃ‌ষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-প‌রিচালক সিরাজুল ইসলাম ব‌লেন, ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে সরিষার আবাদ বাড়াতে কৃষকদের সার বীজ দিয়ে সহযোগিতা করা হ‌চ্ছে। পাশাপাশি কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। ফলে এ বছর সরিষার ভালো ফলন হবে বলে আশা করছি।

আরিফ হাসান/এসকেডি