বগুড়ায় সকাল ৬টার দিকে তাপমাত্রা ১০ এর ওপরে থাকলেও ঘন কুয়াশা ও হিম শীতে ঠাণ্ডার পারদ নেমে আসে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। শৈত্যপ্রবাহ ও তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে থাকার পরেও বুধবার বগুড়ার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। কারণ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা জানার আগেই জেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু হয়ে যায়। 

বুধবার (২৪ জানুয়ারি) সাড়ে ৮টার দিকে বগুড়া আবহাওয়া কার্যালয়ের উচ্চ পর্যবেক্ষক সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া আবহাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, সকাল ৬টার দিকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরে কোনো এক সময় তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রিতে নেমে স্থির হয়ে থাকে। এরপর আবার ৮টার দিকে তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়।

জেলা আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে বগুড়ায় এ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়। সকাল ১২ টার দিকে রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার আগের দিন সোমবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

জেলা শিক্ষা অফিসার হযরত আলী বলেন, সকাল ৬ টার দিকে আমি আবহাওয়া অফিসে খোঁজ নিয়েছিলাম। সেখান থেকে আমাকে জানানো হয়েছিল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি। ১০ এর ওপরে যেহেতু আছে বন্ধের কোনো প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু পরে আবার তারা জানাল তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি। আমি খোঁজ নিয়েছি এখন তাপমাত্রা আবার অনেক বেশি আছে।  

তিনি বলেন, ততক্ষণে শহরের অধিকাংশ স্কুল শুরু হয়ে গেছে। আবার আমাদের শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে নির্দেশনা দেওয়া আছে আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকলে বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে। এসব পরিস্থিতিতে আমরাও বিব্রত। কিন্তু কিছু করার নেই।

সিদ্ধান্তের বিষয় জানতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আসাদুজ্জামান চৌধুরীকে কল দেওয়া হলে ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

জেলার শিক্ষা দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বগুড়ায় ১ হাজার ৬০৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এ ছাড়া মাধ্যমিক ৪৪৯টি, মাদরাসা ৩০৭টি, স্কুল ও কলেজ ৩১টি রয়েছে।

গত কয়েক দিনের টানা শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশায় বগুড়ার জনজীবন অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে। বেশি কষ্টে রয়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। জীবিকার প্রয়োজনে শীতকে উপেক্ষা করে ঘর থেকে বের হতে হচ্ছে।

এমনই একজন বগুড়ার শাজাহানপুরের বীরগ্রাম এলাকার মুড়ি বিক্রেতা অভয় কুমার। তিনি বলেন, ঋণের কিস্তি আছে। আর বিক্রি না হলে সংসারের খরচ সামলানো যায় না। এ জন্য ভোরবেলাতেই বের হতে হয়।

বগুড়ার সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান বলেন, আগামী আরও তিন থেকে চার দিন তাপমাত্রার এই অবস্থা থাকবে। তারপর আশা করা যাচ্ছে শীতের প্রকোপ কমে আসবে।

আসাফ-উদ-দৌলা নিওন/এএএ