অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের মামলায় গাইবান্ধা প্রধান ডাকঘরের বরখাস্তকৃত পোস্টাল অপারেটর হাবিবুর রহমানকে ৯ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আত্মসাৎ করা প্রায় ২৯ লাখ টাকা আগামী ৬০ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফেরত দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

সোমবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে রংপুর অঞ্চলের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিশেষ আদালতের বিচারক হায়দার আলী এ রায় দেন। এর আগে আরও একটি মামলায় ৯ বছরের সাজা হয়েছে হাবিবুর রহমানের।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, হাবিবুর রহমান গাইবান্ধা ডাকঘরে পোস্টাল অপারেটর পদে চাকরি করাকালীন ভুয়া সঞ্চয়পত্রের অ্যাকাউন্ট খুলে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। এ ছাড়াও তিনি অবৈধভাবে তিন তলা বাড়ি, ৪৫ বিঘা জমি ও সন্তানদের নামে ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ অর্থ রেখে দেন।

এ ঘটনায় দুদক তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালিয়ে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগের সত্যতা পায়। ২০১৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দুদকের সহকারী পরিচালক বীরকান্ত রায় বাদী হয়ে দুদক আইনে আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন। তদন্ত শেষে হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়।

ওই মামলায় সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষে সোমবার রংপুর স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক হায়দার আলী দুদক আইনের ২০০৪ এর ২৬ (০২) ধারায় ১ বছর এবং ২৭(১) ধারায় আসামিকে ৮ বছরের কারাদণ্ডাদেশ এবং আত্মসাতকৃত ২৮ লাখ ৯১ হাজার ৩৯৩ টাকা জরিমানা করেন। এছাড়াও আসামিকর্তৃক সমপরিমাণ আত্মসাৎ করা টাকা ৬০ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে দেওয়ার আদেশ দেন বিচারক। অন্যথায় আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে হাবিবুর রহমানকে।

এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষ জানিয়েছে, এ ধরনের রায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি ও অনিয়ম প্রতিরোধে মাইফফলক হিসেবে কাজ করে।

সরকারি  কোঁসুলি এ কে এম হারুন উর রশীদ জানান, অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান মাত্র দুই হাজার টাকা বেতনে চাকরিতে যোগদান করেন। চাকরিকালে তিনি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সেই সাথে তার নামে ১০টি মামলা হয়েছে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুর রহমান জানান, এই রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।

রায় ঘোষণার সময় আসামি হাবিবুর রহমান আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। তার বাড়ি গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার চরেরহাট পবনাপুর গ্রামে। ইতোমধ্যে কুড়িগ্রাম পোস্ট অফিসের ৫৬ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় তার ৯ বছরের সাজা হয়েছে। 

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর