জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) আশুলিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে রেজিস্ট্রার আবু হাসান বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, গত ৩ ফেব্রুয়ারি জনৈক নারীর স্বামীকে মামুন নামের এক ব্যক্তি জাবি ক্যাম্পাসে ঘুরতে নিয়ে আসেন। মামুন ওই নারীর স্বামীকে জানায় যে, তিনি কয়েক দিন মীর মশাররফ হোসেন হলে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে থাকবেন। তাই তাদের বাসায় থাকা মামুনের জমাকাপড় আনা প্রয়োজন। মামুনের কথায় নারীর স্বামী তার স্ত্রীকে ফোন করে মামুনের জামাকাপড় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আসতে বলেন। এ সময় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান, একই বিভাগের ৪৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মুরাদ হোসেন ওই নারীর স্বামীকে মীর মশাররফ হোসেন হলের ৩১৭ নম্বর কক্ষে আটকে রাখেন। নারী তার স্বামীর কথামতো মামুনের জমাকাপড়ের ব্যাগ দিয়ে মীর মশাররফ হলের সামনে এলে মামুন তার কাছ থেকে জামাকাপড়েরর ব্যাগ নিয়ে হলের কক্ষে রেখে আসেন। নারীর স্বামী হলের অন্য ফটক (জঙ্গলের দিকে) দিয়ে আসবেন জানিয়ে ওই নারীকে সেদিকে যেতে বলেন। পরে মোস্তাফিজুর রহমান এবং মামুন মিলে ওই নারীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনের পেছনের অংশে নিয়ে ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে ওই দম্পতি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, খবর পেয়ে প্রক্টরিয়াল বডি, হল প্রশাসন ও নিরাপত্তা শাখার লোকজন পুলিশসহ মীর মশাররফ হোসেন হলে উপস্থিত হয়ে অপরাধীদের আটক করতে গেলে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহ পরান, একই বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এএসএম মোস্তফা মনোয়ার সিদ্দিকি, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন সাগর ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হাসানুজ্জামান অভিযুক্তদের পলায়নে সহায়তা করে। এ সময় অভিযুক্তদের পলায়নে সহযোগিতাকারীদের হল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট সোপর্দ করা হয়।

এ বিষয়ে আশুলিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফএম সায়েদ জানান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি অভিযোগ দিয়েছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরও দুই আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এমজেইউ