ময়ূর নদ বাঁচাতে সমন্বিত পরিকল্পনার দাবি
খুলনার ময়ূর নদ বাঁচানোর দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে পরিবেশবাদী নাগরিক সংগঠন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। এ সময় অভিযোগ করা হয়, সঠিক নিয়ম অনুসরণ না করে খুলনা নগরের ময়ূর নদ খনন করা হচ্ছে।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় নগরের গল্লামারী নদের পাড়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের খুলনা জেলার সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মো. বাবুল হাওলাদার।
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, খুলনা সিটি করপোরেশন ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় ময়ূর নদের বয়রা শ্মশানঘাট থেকে সাচিবুনিয়া সেতু ও ক্ষেত্রখালী-খুদিয়া নদীর আড়ংঘাটা কালভার্ট থেকে বয়রা শ্মশানঘাট পর্যন্ত মোট পাঁচ কিলোমিটার খনন করছে। কিন্তু এ নদ বিল ডাকাতিয়া থেকে উৎপন্ন হয়ে ক্ষেত্রখালী-খুদিয়া নাম ধারণ করে বয়রা শ্মশানঘাট এলাকায় নাম পরিবর্তিত হয়ে ময়ূর নদ ধারণ করে আলুতলা এলাকায় রূপসা নদীতে পড়েছে। মূলত খুলনা মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু ময়ূর নদটি বাঁচাতে খুলনাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি উপেক্ষিত রয়ে গেছে। একটি নদীর আংশিক খনন করে তার প্রবাহ নিশ্চিত করা বা বাঁচানো সম্পূর্ণ বাস্তবতা পরিপন্থি। শুধু তাই নয়, আংশিক খননের ফলে জলাবদ্ধতা নিরসনের বিষয়টিও যথেষ্ট প্রশ্নবিদ্ধ থেকে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, সমগ্র নদটি একটি সমন্বিত পরিকল্পনার আওতায় এনে আলুতলাস্থ ১০ গেট থেকে বিল ডাকাতিয়া পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদটি এবং এর সংযুক্ত খালসমূহ খনন করে উজান এবং ভাটিতে সমান প্রবাহ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। অন্যথায় এ প্রকল্পের কাজ শুধু অর্থ অপচয় হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
এ সময় বক্তারা বলেন, ময়ূর নদ খনন প্রকল্পের চলমান খনন কাজ পানি শুকিয়ে ভেকু ও শ্রমিক দিয়ে মাটি কাটার কথা থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে পানি না সেঁচে পানির মধ্যেই খনন কাজ চলছে। এর ফলে এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য কতটা বাস্তবায়িত হবে সে বিষয় আমরা যথেষ্ট সন্দিহান।
অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, খুলনা মহানগরীসহ এ অঞ্চলের পরিবেশ প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা, জলাবদ্ধতা নিরসন, কৃষিতে সেচ, মৎস্য চাষ, নদী নির্ভর মানুষের স্বাভাবিক জীবন-যাপন পুনরুদ্ধারে ময়ূর নদের দুই পাড়ের অবৈধ দখল উচ্ছেদ, দূষণ বন্ধ এবং সমগ্র নদটিকে খনন করে একটি সমন্বিত স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় এনে সমগ্র নদটি জোয়ার-ভাটার আওতায় আনা সময়ের দাবি।
মোহাম্মদ মিলন/এএএ