হঠাৎ করেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে গাছের গোলাপ ফুল। সবুজ পাতা আর সুবাস ছড়ানোর আগেই ঝরে পড়ছে ফুল। এই অজানা ভাইরাসের আতঙ্কে রয়েছেন সাভারের গোলাপ গ্রামের চাষিরা। চাষিদের এখন স্বপ্ন ভঙ্গের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে অজানা এই ভাইরাস। 

চোখের সামনেই ক্ষেতের পর ক্ষেত ধ্বংস হয়ে গেলেও নিরুপায় সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের শ্যামপুর, মৈস্তাপাড়া, বাগ্নীবাড়ি, কালিয়াকৈর, সাদুলাপুর, আকরাইন, ভবানীপুর, রাজারবাগ, সারুলিয়া এলাকার কয়েক শতাধিক গোলাপচাষি। তারা বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও ২১শে ফেব্রুয়ারি ঘিরে যে স্বপ্ন বুনেছিলেন তা এ বছর অনেকটাই মলিন। ফলে ফুলের চাহিদা অনুসারে যোগান না থাকায় গোলাপ ফুলের দাম বাজারে অনেকটাই চড়া।

সরেজমিনে দেখা যায়, সাভার উপজেলায় ২০টি গ্রামে ২৩০ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে গড়ে ওঠেছে গোলাপ বাগান। এর মধ্যে বিরুলিয়া ইউনিয়নের প্রায় ২০০ হেক্টর জমিতে গোলাপের চাষাবাদ হয়।

শ্যামপুর এলাকার গোলাপ চাষি আলম জানান, এ বছর ফুলের চাহিদা বেশি। কিন্তু ফুলের উৎপাদন কম হয়েছে। অজানা রোগে হঠাৎ করেই পাতা ও কলি শুকিয়ে গেছে। তারপরও গাছে ফুল এলে তা মাটিতে ঝরে যাচ্ছে।

একই এলাকার গোলাপ চাষি কবির হোসেনও ৫ বিঘা জমিতে গোলাপ চাষ করেছিলেন এক বুক স্বপ্ন নিয়ে। কিন্তু ভাইরাসে তার বাগানের ফুল নুয়ে পড়েছে। সারাবছর ঠিকমতো পরিচর্যা করেও আশানুরূপ ফলন না পাওয়ায় হতাশার কথা জানান তিনি। অন্যদিকে এ বছর গোলাপের আবাদ ভালো না হওয়ায় প্রভাব পড়তে শুরু করেছে পাইকারী ও খুচরা বাজারে ফুলের দোকানে।

শাহবাগ থেকে ফুল কিনতে আসা রফিকুল জানান, এ বছর বাগানে এসে ফুলের দাম পিস প্রতি ৩০-৩৫ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে। গেল কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর ফুলের দাম অনেক বেশি। অনেক বাগানেই ফুল নেই। তাই বাধ্য হয়ে ওই দামেই ফুল কিনতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।

তবে গোলাপ চাষিদের অভিযোগ, এই রোগের কোনো সমাধান বা সঠিক নিদের্শনা দিতে পারেনি উপজেলা কৃষি অফিস। সাদুল্লাপুরের গোলাপ চাষি মনতাজ উদ্দিন ক্ষোভ নিয়ে বলেন, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে লোক এসে বলে, আপনারা সার দিয়েন না, সেচ দিয়েন না। কিন্তু আমরা এগুলো জানি। তারা কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

সাভার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. শারমিন সুলতানা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আবহাওয়াজনিত সমস্যায় কুয়াশা ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারণে গোলাপের গাছে সমস্যা হয়েছিল। তবে এখন বাগানের অবস্থা ভালো। আমরা চাষিদের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়েছি। ব্যানার, ফেস্টুনসহ সার প্রয়োগ সম্পর্কে চাষিদের সচেতন করা হয়েছে। এর আগেও এ ধরনের সমস্যা হয়েছিল। যদিও আবহাওয়া এখন ভালো তাই আমরা আমাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারব বলে আশা করছি।

আরকে