ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মো. শহীদ আহমদ

মৌলভীবাজারে শ্রীমঙ্গলে দেশের দ্বিতীয় চা নিলাম কেন্দ্রে সোনার বাংলা টি ব্রোকার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান চা ব্যবসায়ী মো. শহীদ আহমদকে তুলে নিয়ে ২৭ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষকলীগের সদস্য সচিব মো. হেলাল আহমদের বিরুদ্ধে। 

মো. হেলাল আহমদ শ্রীমঙ্গল চা ব্রোর্কাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি তুলে নেওয়ার পর ২৭ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শহীদ আহমদ। 

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী শহীদ আহমদ বাদী হয়ে শ্রীমঙ্গল থানায় দুইজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৮ থেকে ১০ জনকে আসামি করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। 

অভিযুক্তরা হলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষকলীগের সদস্য সচিব মো. হেলাল মিয়া (৪০) ও শ্রীমঙ্গল ট্রাক ট্যাংক লরি পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান মিয়া (৪৭)। 

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার গাগলাজোর গ্রামে। তিনি শ্রীমঙ্গল ৩নং পুল এলাকায় দুই যুগ ধরে বসবাস করছেন। 

অভিযোগপত্রে বলা হয়, সোনার বাংলা ব্রোকার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং শ্রীমঙ্গল চা নিলাম কেন্দ্রের ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টায় ২২তম চা নিলাম পরিচালনা করার জন্য শ্রীমঙ্গল শহরের জেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে যান। এ সময় হেলাল আহমদ ও শাহজাহান মিয়াসহ অজ্ঞাতনামা ভাড়াটে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে তার ওপর অতর্কিতভাবে হামলা করে এবং তাকে কিল, ঘুসি ও চর থাপ্পড় মেরে একটি প্রাইভেট কারে উঠিয়ে শহরের মিশন রোডস্থ তাদের ব্যক্তিগত অফিসে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে তার কাছে ২৭ লাখ টাকা দাবি করে। সেখানে তিন ঘণ্টা আটকে রাখার পর ওইদিন রাত ৮টার মধ্যে ২৭ লাখ টাকা দেওয়ার শর্তে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সেই শর্ত ভাঙলে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। 

এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষকলীগের সদস্য সচিব ও শ্রীমঙ্গল ব্রোকার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.হেলাল আহমদ বলেন, তার কাছে চা পাতার ২৭ লাখ ৩৩ হাজার টাকার মতো পাওনা আছে। এটার যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। ঘটনার দিন অকশনের পরে তারে আমি আমার অফিসে তাকে চা খাওয়ার জন্য নিয়ে আসি। এরপর তিনি রাত ৮টার সময় আমার পাওনা টাকার বিষয়ে চা ব্যবসায়িদের নিয়ে বসবে বলে চলে যান। তাকে কোনো ধরনের জিম্মি করার ঘটনা ঘটেনি।

এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল চা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. চেরাগ আলী বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। তবে মোবাইল ফোনে এ বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলতে রাজি হননি তিনি।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চা ব্যবসায়ী ব্যবসায়ী সমিতি উপদেষ্টা আকরাম খান বলেন, খবর পেয়ে আমি সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছি। বিষয়টি সমাধানের জন্য ওইদিন রাতে সামাজিকভাবে সালিশ বৈঠকে বসার জন্য বলেছিলাম। 

শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

ওমর ফারুক নাঈম/এএএ