রাজবাড়ীতে ১০ দিনব্যাপী নলিয়ার মেলা শুরু
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের নলিয়া গ্রামে হরি পদ্মলোচন ঠাকুরের ২৯০তম তিরোধান তিথিতে ১০ দিনব্যাপী কয়েক শ বছরের পুরোনো মেলা শুরু হয়েছে। শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ভোর থেকে মেলা কমিটির আয়োজনে বালিয়াকান্দির হরিঠাকুর অঙ্গনের দীঘিতে গঙ্গাস্নান ও মহানামযজ্ঞ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই মেলা শুরু হয়।
জানা গেছে, দেশ-বিদেশের হাজার হাজার ভক্তের সমাগম ঘটে এই মেলায়। যুগ যুগ ধরে চলে আসা সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে রয়েছে এই মেলা। মেলাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। মেলায় শিশুদের জন্য বিভিন্ন রকমের বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে। ছোট-বড় তিন শতাধিক দোকান, বাঁশ বেতের তৈরি গৃহস্থালি জিনিসপত্র, কসমেটিকস ও খেলনার দোকান রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
স্নান করতে আসা আরতী হালদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, নলিয়ার মেলার বয়স ২৯০ বছর। প্রতি বছর এখানে ভক্ত সমাগম হয়ে থাকে। মেলায় হাজার হাজার মানুষ আসেন। কিন্তু এখানে অনেক সমস্যা রয়েছে। একটি মাত্র ঘাটে নারী-পুরুষের স্নান করতে হয়, যা সবার জন্য কষ্টকর। আরেকটি স্নান ঘাটের দাবি তার।
মেলায় আসা ভক্ত পাপড়ী কুন্ডু বলেন, আমরা মূলত আজ গঙ্গাস্নান করতে এসেছি। এখানে এলে পূর্ণ্য লাভ করা যায়। পাপ মোচন হয় গঙ্গাস্নানের মধ্য দিয়ে। এই স্নানকে ঘিরেই এখানে মেলা বসে বসে। কয়েক শ বছর ধরে এই মেলা হয়ে আসছে। মেলাকে ঘিরে এই অঞ্চলে উৎসব শুরু হয়।
বিজ্ঞাপন
মেলায় আসা মল্লিকা রাণী সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, নলিয়ার মেলাটি ঐতিহ্যবাহী। এই মেলায় ‘পুড়া বাতাসা’ পাওয়া যায়। অন্য কোনো মেলায় এই বাতাসা পাওয়া যায় না। এ ছাড়া এখানে বাঁশ, বেত ও কাঠের তৈরি জিনিসপত্র পাওয়া যায়।
মেলায় আসা ব্যবসায়ীরা বলেন, আমরা দেশের বিভিন্ন স্থানে মেলায় দোকান বসাই। মেলার সংখ্যা দিনদিন কমে আসছে। অনেক জায়গা থেকে ফিরে আসতে হয়। এতে আমাদের কর্মসংস্থানের ওপর প্রভাব শুরু হয়েছে। তবে নলিয়ার মেলাটি ব্যতিক্রম। এটি প্রাণের মেলা। শত শত বছর আগে থেকে এই মেলা হয়ে আসছে। এখানে আমাদের ভালো বেচা-কেনা হয়।
শ্রী শ্রী হরিঠাকুর অঙ্গনের সেবাইত গোপাল ঠাকুর ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকাল থেকে গঙ্গাস্নানের মধ্য দিয়ে আমাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয়েছে।
রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার জি. এম. আবুল কালাম আজাদ বলেন, নলিয়ার মেলা একটি ঐতিহ্যবাহী মেলা। এই মেলায় হাজার হাজার মানুষ আসেন। এখানে ধর্মীয় বিষয় যেমন রয়েছে তেমনি ঐতিহ্যের ঘ্রাণ পাওয়া যায়। পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/এমজেইউ