দুই প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন নিচ্ছেন ইউপি সদস্য সেরাজুল
সিরাজগঞ্জে সরকারি দুই প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন ভাতা নেন ইউপি সদস্য সেরাজুল ইসলাম। তিনি একই সঙ্গে দাখিল মাদরাসার অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর ও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য।
একদিকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে সরকারি বেতন-ভাতা নিচ্ছেন সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার খোকশাবাড়ি ইউনিয়নের সদস্য মো. সেরাজুল ইসলাম। অন্যদিকে বেতন নিচ্ছেন এমপিওভুক্ত মাদরাসার অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে।
বিজ্ঞাপন
সেরাজুল ইসলাম গত ২০১২ সালে সদরের খোকশাবাড়ি ইউনিয়নের শালুয়াভিটা সিনিয়র দাখিল মাদরাসায় যোগদান করেন ও ২০২১ সালে ওই ইউনিয়ন থেকে ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য পদে নির্বাচিত হন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শিক্ষা ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নিয়ম না মেনে ক্ষমতার অপব্যবহার করে শালুয়াভিটা সিনিয়র দাখিল মাদরাসার অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার হিসেবে ১২ হাজার টাকা বেতন উত্তোলন করেন। একই সঙ্গে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে ৩ হাজার ৬শ টাকা এবং ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সম্মানী পান ৪ হাজার ৪শ টাকা। এভাবে তিনি প্রত্যেক মাসে সরকারি ও এমপিওভুক্ত দুই প্রতিষ্ঠান থেকে ২০ হাজার টাকা বেতন ভাতা নেন।
বিজ্ঞাপন
ইউপি সদস্য সেরাজুল ইসলাম দুই জায়গা থেকে সরকারি বেতনভাতা নেওয়ার কথা স্বীকার করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি মাদরাসার চাকরি থেকে ১২-১৩ হাজার টাকা পাই এবং পরিষদ থেকে সরকারি বেতনটা পাই। কিন্তু পরিষদের সম্মানী ভাতা নেই না। তবে দুই জায়গা থেকে বেতন-ভাতা নেওয়া যাবে না এটা আমার জানা নেই।
খোকশাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সচিব শফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, তিনি সরকারি ভাতা পান ৩ হাজার ৬শ টাকা এবং ৪ হাজার ৪শ টাকা পরিষদ থেকে পাওয়ার কথা। কিন্তু পরিষদের টাকাটা সাধারণত পান না, তবে সরকারি সম্মানী ভাতা নেন।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এলিজা সুলতানা বলেন, এমপিওভুক্ত (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) কোনো মাদরাসা বা স্কুল-কলেজের শিক্ষক যদি জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হন তাহলে তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা ইউনিয়ন পরিষদ যেকোনো এক জায়গা থেকে সরকারি বেতন-ভাতা নিতে পারবেন। সেরাজুল ইসলাম যদি দুই প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন-ভাতা নিয়ে থাকেন তাহলে এ পর্যন্ত যা নিয়েছে তা যেকোনো এক প্রতিষ্ঠানের সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে হবে।
সিরাজগঞ্জ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) মো. আফছার আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, এটা স্পষ্ট যে, এক সঙ্গে দুই প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন উত্তোলন করা যাবে না।
সিরাজগঞ্জ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। সরকারি দুই প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন ভাতা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমি এখনই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য বলছি এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে যে ভাতা পান সেটা বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দিচ্ছি।
শুভ কুমার ঘোষ/আরকে