নোয়াখালীর সদর উপজেলার নোয়াখালী ইউনিয়নে অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব দিনমজুর মো. বেলাল মিয়ার (৭০) পাশে দাঁড়ালেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) কর্মচারীরা। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলম বেলাল মিয়ার হাতে  এক লাখ টাকার চেক তুলে দেন।

জানা গেছে, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে নোয়াখালী সদর উপজেলার নোয়াখালী ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের গোলাম মাওলা চৌধুরীর বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে মৃত মায়ের মিলাদের জন্য রাখা নগদ টাকা-বাজারসহ প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি দিনমজুর বেলাল মিয়ার। বেলাল মিয়ার ছোট ছেলে রমজান আলী নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। 

১৮ ফেব্রুয়ারি জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টে ‘আগুনে নিঃস্ব বেলাল মিয়া ১২ সদস্যের পরিবার নিয়ে খোলা আকাশের নিচে শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয়টি নজরে আসলে নোবিপ্রবি কর্মচারীরা এগিয়ে আসেন। তারা তাদের বেতনের অংশ থেকে এক লাখ টাকা অর্থ সহায়তা প্রদান করেন। 

পরিবহন শাখার কর্মচারী মো. সিরাজুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘর পুড়ে গিয়ে তারা নিঃস্ব হয়ে গেছে। তারা পুরো পরিবার খোলা আকাশের নিচে ছিলে। আমরা কর্মচারীরা নিজেদের বেতন থেকে টাকা জমিয়ে এক লাখ টাকা বেলাল মিয়ার ছোট ছেলে রমজান আলীর কাছে দিয়েছি। তাদের ঘুরে দাঁড়াতে এই অর্থসহায়তা কাজে লাগবে।

সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের কর্মচারী সোহরাব হোসেন দুখু ঢাকা পোস্টকে বলেন, বেলাল মিয়া আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেইলি বেসিসে কাজ করেন। তার ছেলে আমাদের সহকর্মী। তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। দশে মিলে একজনের পাশে দাঁড়ালে তার জীবনটা সহজ হয়। আমরা চাই তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুক।

বেলাল মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার মায়ের দোয়ার জন্য আমরা পুরাতন বাড়িতে কোরআন খতম করছিলাম। হঠাৎ জানতে পারি আমাদের ঘরে আগুন লেগেছে। এসে দেখি পুরো ঘরে আগুন। থামানোর কোনো ব্যবস্থা নেই। আমার মায়ের মিলাদের জন্য মানুষ কিছু টাকা দিয়েছে, আমার জামাইয়ের সিএনজি বিক্রির ৬০ হাজার টাকা ছিল। আগুনে সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমার পাশে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা দাঁড়িয়েছেন। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমার বিশাল উপকার হয়েছে। আমি সবার জন্য দোয়া করি। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি নিজে বেলাল মিয়ার বাড়িতে গিয়েছি। তার ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কোনো কিছুই ছিলো না। ভাতের চাল পুড়ে গেছে, পরনের কাপড় পুড়ে গেছে। এক কাপড়ে ছিল তারা। আমিও বেলাল মিয়াকে সহযোগিতা করেছি। এক লাখ টাকা দিয়ে কর্মচারীরা পাশে দাঁড়ানোয় তাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। 

চেক দেওয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের কর্মচারী আবদুল্লাহ আল মামুন, রেজিস্ট্রার শাখার এনায়েত হোসেন রাব্বি, পরিবহন শাখার আবদুল করিম, আকরাম হোসেনসহ বিভিন্ন শাখার কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। 

হাসিব আল আমিন/আরএআর