পিস্তলসহ গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে এল ওয়াসিমের অপকর্মের ফিরিস্তি
বিদেশি পিস্তল ঠেকিয়ে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের সময় জনতার হাতে আটক হন ওয়াসিম আকরাম খান নামে এক ছিনতাইকারী। পরে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর একে একে বেরিয়ে আসে তার অপকর্মের ফিরিস্তি। তার নামে রয়েছে হত্যা, ছিনতাই, পুলিশের ওপর আক্রমণ, অস্ত্র আইনসহ ১০টি মামলা। বুধবার (১৩ মার্চ) ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিস্তারিত তুলে ধরেন পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা।
গ্রেপ্তার হওয়া ওয়াসিমের বাড়ি নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার সান্দিকোনা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চরখিদিরপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলী খানের ছেলে।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ জানায়, কেন্দুয়ার মরিচপুর থেকে তোফায়েল আহেমেদ নামে এক অটোরিকশা চালককে ওয়াসিমসহ তিনজন মঙ্গলবার রাতে ঈশ্বরগঞ্জের আঠারবাড়ি যাওয়ার কথা বলে ভাড়া করে। তোফায়েলের বাড়ি কেন্দুয়ার গন্ডা ইউনিয়নের গন্ডা গ্রামে। কিন্তু গত মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে আঠারবাড়ি-কেন্দুয়া সড়কের গাবরকালিয়ান এলাকায় গিয়ে একটি সংযোগ সড়কে প্রবেশ করানো হয়। একপর্যায়ে ওয়াসিমের নেতৃত্বে তিনজন অটোরিকশাটি ছিনতাই করতে চেষ্টা করে। নিজের সঙ্গে থাকা বিদেশি পিস্তল ঠেকিয়ে অটোরিকশাটি নিতে চাইলে দৌড়ে গিয়ে চিৎকার শুরু করে তোফায়েল। ওই সময় চক্রের সদস্যরা পালানোর চেষ্টা করে। পরে পুরো এলাকার লোকজন ও পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে এলাকার ফারুক হোসেনের বাঁশঝাড় থেকে ওয়াসিমকে আটক করে। পরে সেখান থেকে তাকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। ওই সময় ওয়াসিমের কাছ থেকে বিদেশি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি ও একটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ আরও জানায়, ওয়াসিমের বিরুদ্ধে কেন্দুয়া থানায় হত্যা, অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনের মামলাসহ মোট আটটি মামলা রয়েছে। ওয়াসিম দীর্ঘদিন ধরে তার কিছু সহযোগীর সঙ্গে সশস্ত্র অটো ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল। ২০১০ সালে অস্ত্র আইনে মামলার মাধ্যমে পুলিশ খাতায় নিজের নাম লেখায় ওয়াসিম। ২০১৪ সাল পর্যন্ত আরও চারটি মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। এরপর তিনি সৌদি আরবে চলে যান। সেখান থেকে দেশে ফেরার পর ফের অপরাধ কার্যক্রম শুরু করেন। ২০২৩ সালে একটি ও ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে কেন্দুয়ায় আরও দুটি মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। সর্বশেষ অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ঈশ্বরগঞ্জ থানায় অটোরিকশা চালক তোফায়েল বাদি হয়ে একটি ও পুলিশ বাদি হয়ে অস্ত্র আইনে পৃথক আরেকটি মামলা করেন।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা বলেন, ওয়াসিম দীর্ঘদিন ধরে ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিল। তারা শুধু ছিনতাই নয়, হত্যাসহ অন্যান্য অপরাধের সঙ্গেও যুক্ত ছিল। তিনি পেশাদার সশস্ত্র সন্ত্রাসী। সঙ্গে আরও দু’জন সন্ত্রাসীকেও আমরা চিহ্নিত করেছি। ওয়াসিম পারিবারিকভাবেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিল। এটি সংগঠিত অপরাধ চক্র হিসেবে আমরা চিহ্নিত করতে পেরেছি। এদের সঙ্গে অন্য যারা যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।
উবায়দুল হক/এএএ