ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহিপালে পরিবহন শ্রমিক, চালক ও পথচারীদের মাঝে ইফতার বিতরণ করছেন ফেনী পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী। প্রতিদিন বিকেল হলেই ইফতারের থলে নিয়ে রোজাদারদের জন্য অপেক্ষা করেন তিনি। ইফতারের এ আয়োজন অব্যাহত থাকবে শেষ রোজা পর্যন্ত। 

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিকেল থেকেই মহিপাল ফ্লাইওভারের দক্ষিণ পশ্চিম অংশের সড়কে ইফতারের থলে নিয়ে রোজাদারদের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন মেয়র ও তার স্বেচ্ছাসেবক টিম। ইফতারের প্রতিটি প্যাকেটে রয়েছে খেজুর, ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ, জিলাপি, মুড়ি ও পানি। এছাড়াও প্রতি শুক্রবারে দেওয়া হচ্ছে গরুর মাংস দিয়ে রান্না করা বিরিয়ানি।

ইফতারি বিতরণ কার্যক্রমে দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবক মাঈন উদ্দিন সুমন বলেন, মেয়র হওয়ার আগে থেকেই তিনি মহাসড়কে যাতায়াতকারী রোজাদারদের জন্য ইফতারের ব্যবস্থা করেন। এবারও নিজ অর্থায়নে প্রতিদিন ৫০০ থেকে ১ হাজার রোজাদারদের ইফতার দিচ্ছেন। মহাসড়কে চলাচলরত পরিবহনের চালক, শ্রমিক, আশপাশের মসজিদ, মাদ্রাসা ও পথচারীরা এ ইফতারি নেন।

ইফতারের পরে রোজাদারদের জন্য চা চক্রেরও আয়োজন করেন মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী। আর এসব চা চক্র আয়োজন চলে রাত দশটা পর্যন্ত। ইফতার ও চা চক্রে অংশগ্রহণ করতে পেরে খুশি শত মানুষ।

মহিপাল ফ্লাইওভার সংলগ্ন আবুল বাশার নামে এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলেন, ইফতারির প্রতিটি জিনিসপত্রের দাম আকাশচুম্বী। আমাদের এত টাকা খরচ করে ইফতার করার সামর্থ্য নেই। রমজান জুড়ে আসরের নামাজের পর এখান থেকে ইফতার নিচ্ছি।

আবু হেনা নামে মহাসড়কে চলাচলরত এক বাসচালক বলেন, রাস্তায় সময়মতো ইফতারি নিয়ে সবসময় দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। অনেকসময় সারাদিন পরিশ্রম করে পানি দিয়ে ইফতার করতে হয়। তবে এখানে এমন আয়োজনে অনেকে উপকৃত হবে। রোজা রেখে স্বস্তি নিয়ে ইফতার করা যাচ্ছে। 

আহমেদ করিম নামে শহরের এক বাসিন্দা বলেন, মেয়র রমজান মাস জুড়ে সাধারণ মানুষের চাহিদার কথা চিন্তা করে শহরের সবকটি মসজিদের সামনে ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করার জন্য পানির ব্যবস্থা করেছেন। এসব কাজ সমাজে অনুকরণীয়। আমরা পৌরবাসী কৃতজ্ঞ। 

এ ব্যাপারে পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিগত ৮ বছর ধরে মহাসড়কে রোজাদারদের জন্য ইফতারি বিতরণ করছি। আল্লাহ আমাকে এমন কাজ করার তৌফিক দিয়েছেন বলে শুকরিয়া আদায় করছি। একজন রোজাদারকে ইফতার করানোর আনন্দ বা আত্মতৃপ্তি ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। 

মেয়র বলেন, প্রথম রমজানে আমরা ৫০০ প্যাকেট দিয়ে কার্যক্রমের শুরু করেছি। রমজান যত বাড়ে প্যাকেটের পরিমাণও বাড়ে। ৫০০ থেকে শুরু হয়েছে কয়েকদিন পরে ১ হাজার এরপর ১৫০০ প্যাকেট পর্যন্ত বিতরণ করি। এখান থেকে কোনো মানুষ খালি হাতে যাবে না।
সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে স্বপন মিয়াজী বলেন, সমাজে অনেক মানুষ খুব কষ্টে দিনযাপন করছে। সামর্থ্যবানরা যদি তাদের পাশে দাঁড়ায় তাহলে কিছুটা হলেও কষ্ট কমবে। অনেকগুলো মানুষের মুখে হাসি ফুটবে।

তারেক চৌধুরী/এএএ