দাদুর চুমুর প্রতিবাদ করায় মাইশাকে হত্যা
পুলিশের হাতে আটক ছক্কু
রংপুরে নিখোঁজের একদিন পর বাড়ির পাশের ডোবা থেকে মোবাশ্বিরা আক্তার মাইশা নামে সাড়ে চার বছরের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই।
বাড়িতে ডেকে নিয়ে শিশু মাইশাকে যৌন হয়রানি ও চুমু দেয় আসামি। পরে ওই শিশু তাকে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে আঘাত করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সজোরে ধাক্কা দেন আসামি। পাশে থাকা বাঁশের সঙ্গে বুকে ধাক্কা লেগে ঘটনাস্থলে মারা যান শিশু মাইশা।
বিজ্ঞাপন
এ ঘটনায় গ্রেফতার জহুরুল হক রানা ওরফে ছক্কু (৪৫) পিবিআইয়ের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিশু মাইশাকে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে রংপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।
এর আগে বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) রাতে নগরীর কেরানীপাড়া এলাকার একটি বাসা বাড়ি থেকে জহুরুল হক রানা ওরফে ছক্কুকে গ্রেফতার করা হয়।
বিজ্ঞাপন
পিবিআই পুলিশ সুপার বলেন, শিশুটির পরিবার ও অভিযুক্ত জহুরুল হক রানা ওরফে ছক্কু প্রতিবেশী। মাইশা তাকে দাদু বলে ডাকত। ছক্কুর স্ত্রী ও মেয়ে তার শ্বশুর বাড়িতে থাকত। বাড়িতে একা থাকতেন ছক্কু। ঘটনার দিন গত সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ছক্কু মাইশাকে মোয়া কেনার জন্য দুই টাকা দেন।
শিশু মাইশা মোয়া (মুড়ির মোয়া) কিনে আনলে ছক্কু কৌশলে তাকে বাড়ির ভেতর নিয়ে যায় এবং কয়েকবার চুমু দেয়। এ সময় মাইশা পাশে পাওয়া বাঁশের কঞ্চি দিয়ে ছক্কুকে আঘাত করলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে সজোরে ধাক্কা দেন। এতে বাঁশের সঙ্গে বুকে ধাক্কা লেগে ঘটনাস্থলে মারা যান মাইশা।
এরপর বস্তায় করে মরদেহ বাড়িতে লুকিয়ে রাখেন। পরে রাত ১১টার দিকে মাইশার মরদেহ প্রতিবেশী মতিন ও শাহিনের ডোবায় ফেলে আত্মগোপনে চলে যান ছক্কু। মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে ওই ডোবার কিনারে মাইশার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা।
এ ঘটনায় মাইশার বাবা মনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ওইদিনই মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। রংপুর পিবিআই নিজ উদ্যোগে ওই মামলার তদন্তভার গ্রহণ করেন। তদন্তের এক পর্যায়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত জহুরুল হক রানা ওরফে ছক্কুকে নগরীর কেরানীপাড়া থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে আদালতে হাজির করা হলে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি।
উল্লেখ্য, সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুর থেকে নিখোঁজ হয় মাইশা। সন্ধ্যা পর্যন্ত তাকে খুঁজে না পাওয়ায় রাতে মাইকিং করা হয়। পরেরদিন মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে ওই ডোবা থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এসপি