দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দিনমজুর স্বামীকে নিয়ে দিন কেটে যাচ্ছিল কোনোমতে। শোবার ঘরের পাশেই গড়ে ছিলেন গরুর ঘর। একটি গরুকে পরম যত্নে লালনপালন করতেন গৃহবধূ আঞ্জুরা বেগম। সামনের ঈদে গরুটি বিক্রি করে ঋণ পরিশোধের স্বপ্ন ছিল তাদের। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ হলো না আঞ্জুরা বেগমের।

রাতে গোয়ালঘরে লাগা আগুনে পুড়ে ষাঁড় গরুটি ভস্মীভূত হয়ে গেছে। আগুন ছড়িয়ে পৌঁছে যায় পাশের শোবার ঘরে। সেই আগুনে পুড়ে ছাই পুরো বসতবাড়ি। আগুন নেভাতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে স্বামী হাসপাতালে ভর্তি। পরম যত্নে লালনপালন করা গরু ও মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে নিঃস্ব আঞ্জুরা বেগম। সেই সঙ্গে আগুনে দগ্ধ স্বামীর চিন্তায় বাকরুদ্ধ আঞ্জুরা।

রোববার (১৮ মার্চ) রাতে নাটোর সদর উপজেলার ছাতনী ইউনিয়নের আগদীঘা হাটপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

সবকিছু হারিয়ে বাকরুদ্ধ আঞ্জুরা বেগম 

প্রতিবেশী সুম্মা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল সন্ধ্যার পর হঠাৎ করেই বিশু শেখের গরুর ঘরে আগুন জ্বলে ওঠে। মুহূর্তেই তা গোয়ালঘর ছাপিয়ে সারা বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। কিন্তু আগুনের ভয়াবহতা এতই ছিল যে কেউ কাছে ভিড়তে পারেনি। গোয়ালঘরের গরু, শোবার ঘরে থাকা খাদ্যসামগ্রী থেকে শুরু করে জমানো নগদ ৩০ হাজার টাকা, আসবাবপত্র সমস্ত কিছুই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় এই পরিবারটি দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

গৃহবধূ আঞ্জুরা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘পরনের কাপড়টা ছাড়া কিছুই বের করতে পারি নাই, আমাদের জায়গা সম্পত্তি কিছু নাই, কি খেয়ে বাঁচমু।’

এ বিষয়ে ছাতনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকালে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। আগুনে পুরো বসতবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আনুমানিক সাড়ে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সরকারিভাবে অনুদান পেতে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কাজ করতে স্থানীয় ইউপি সদস্যকে বলা হয়েছে।

গোলাম রাব্বানী/এমজেইউ