‘বৃদ্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবার তাদেরকে গ্রহণ করছে না’
দেশে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ রেমিটেন্স যোদ্ধা রয়েছেন। প্রবাসীদের উপার্জিত রেমিটেন্স দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রবাসী কর্মীরা এতদিন আমাদেরকে দিয়েছেন, এবার তাদেরকে দেওয়ার জন্য আমাদের সময় হয়েছে। তিনি রেমিটেন্স যোদ্ধাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। আপনাদেরকে ভালো রাখতেই বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রাম ও কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আপনারা এসবে সুফল ভোগ করবেন। কোনো কিছু না বুঝলে আমাদের হটলাইন ১৬১৩৫ নম্বরে কল করে বিস্তারিত জেনে নেবেন। ২৪ ঘণ্টা এ নম্বরে আপনারা সেবা পাবেন।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দুপুরে লক্ষ্মীপুরে বিদেশ প্রত্যাগত অভিবাসী কর্মীদের পুনঃএকত্রীকরণের রেইজ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ডের যুগ্ম সচিব ও পরিচালক (প্রশাসন ও উন্নয়ন) আরিফ আহমেদ খান প্রবাস ফেরত কর্মীদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
‘প্রত্যাগত অভিবাসী, ফিরে এলেও পাশে আছি’ স্লোগানে ওয়েলফেয়ার সেন্টার নোয়াখালী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের উদ্যোগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এ আয়োজন করা হয়।
যুগ্ম সচিব আরিফ আহমেদ খান আরও বলেন, আপনারা বৈধভাবে বিদেশ যাবেন। রেইজ প্রকল্পকে সহযোগিতা করবেন। এটি আপনাদের সুবিধার জন্যই করা হয়েছে। এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো আপনাদেরকে সহযোগিতা করা। যেন আপনারা দেশে ফিরে পরনির্ভরশীল না হন। আপনাদের সম্মান ও সক্ষমতা যেন বৃদ্ধি পায় সেজন্যই প্রকল্পটি কাজ করবে। আপনাদের যেকোনো সমস্যায় আমরা আপনাদের পাশে আছি।
বিজ্ঞাপন
জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহানের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মেহের নিগার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ সোহেল রানা, নোয়াখালী ওয়েলফেয়ার সেন্টার সহকারী পরিচালক খুরশীদ আলম।
সভাপতির বক্তব্যে ডিসি সুরাইয়া জাহান বলেন, যারা বিদেশ থেকে চলে এসেছেন আবার যেতে চান তাদের সহযোগিতা এবং যারা যেতে পারছেন না তাদেরকে দেশে কিভাবে পুনর্বাসন করা যায় তা নিয়েই রেইজ প্রকল্পটি কাজ করছে। প্রত্যাগত অভিবাসী কর্মীদের জন্য অনেক বড় দ্বার উন্মোচন হয়েছে, যারা বিদেশে আর যেতে পারছেন না। একজন রেমিটেন্স যোদ্ধা বলেছেন, বৃদ্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবার তাদেরকে গ্রহণ করছে না। সেক্ষেত্রেও আমাদের সহায়তা করার সুযোগ রয়েছে। রেমিটেন্স যোদ্ধাদের মধ্যে যারা বৃদ্ধরয়েছেন তাদেরকে আমরা বয়স্ক ভাতার আওতায় নিয়ে আসতে পারি। এছাড়াও রেইজ প্রকল্পের মাধ্যমে আপনি দেশে কোনো ব্যবসা করতে চান। আপনার যদি সেই সাহস, মনোবল, সক্ষমতা ও শারিরীক ক্ষমতা থাকে সেক্ষেত্রে শুধু পরামর্শ নয়, আর্থিকভাবে সহায়তা করাও সম্ভব। তার বড় উদাহরণ রেইজ প্রকল্প।
নোয়াখালী ওয়েলফেয়ার সেন্টার সহকারী পরিচালক খুরশীদ আলম বলেন, ২০১৫ সালের পরে যারা বিদেশ থেকে দেশে ফিরে এসেছেন এ প্রকল্পটি তাদের নিয়েই কাজ করছে। আমাদের হটলাইন নম্বরের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা সেবা চালু রয়েছে।
ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড কর্তৃক প্রবাসী কর্মী ও তাদের পরিবারের জন্য চলমান সেবাসমূহ থেকে জানা যায়, বিমানবন্দরে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক কর্তৃক সহায়তার মাধ্যমে মৃতদেহ পরিবহণ ও দাফন খরচের জন্য ৩৫ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়। প্রবাস ফেরত অসহায় কর্মীদের বাড়ি গমনের জন্য ক্ষেত্র বিশেষ আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। প্রবাসী কর্মীর মেধাবী সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়। প্রবাসী কর্মীর সন্তানদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে সহায়তা ও কোটা সংরক্ষণ করা হয়। প্রবাসী কর্মীর প্রতিবন্ধী সন্তানদের মাসিক ভাতা প্রদান করা হয়।
হাসান মাহমুদ শাকিল/এমএএস