বাগেরহাটে ঝড়ের তাণ্ডবে অন্তত দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে কচুয়া উপজেলার চরসোনাকুর গ্রামের আরিফুল ইসলাম লিকচান (৩৫) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া গাছ ও বিলবোর্ড পড়ে ১০ জন আহত হয়েছেন।

রোববার (৭ এপ্রিল) সকাল ৯টা ৪০ থেকে ১০টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত চলা ঝড়বৃষ্টিতে এই ক্ষয়ক্ষতি হয়।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হঠাৎ করে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে আসে পুরো জেলা। সকালেই যেন রাত নেমে আসে। এর কিছুক্ষণ পরেই শুরু হয় বজ্রসহ ঝড়বৃষ্টি। এতে বাগেরহাট সদর উপজেলার পুটিমারি, রাধাবল্লভ, গবরদিয়য়, ডেমা, বাশবাড়িয়া, শহরতলীর মারিয়া পল্লী ও কচুয়াসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে এই ক্ষয়ক্ষতি হয়।

এ ছাড়া বাগেরহাট টার্মিনাল এলাকায় ঝড়ে বিলবোর্ড পড়ে একটি বাস ও পাঁচটি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং দুইজন বাস শ্রমিক আহত হয়েছেন। ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণে কাজ করা হচ্ছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

দুপুরে বাগেরহাট সদর উপজেলার রাধাবল্লব বেড়িবাঁধ এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁধের পাশে আশ্রয় নেওয়া তারা ভানু খোলা আকাশের নিচে সন্তানদের নিয়ে বসে আছেন। তার ভাষায়, মুহূর্তের মধ্যেই ঘর উড়িয়ে নিয়ে সব শেষ করে দিয়েছে। এখন ঘরের পোতা ছাড়া কিছু নেই। কি করব, কোথায় যাব বলেই কেঁদে ফেলেন তিনি।

বাগেরহাট পৌরসভার সোনাতলা এলাকার বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকাল পৌনে ১০টার দিকে আকাশ হঠাৎ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে চারদিকে অন্ধকার নেমে আসে। এরপরই প্রচণ্ড বাতাস, ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি শুরু হয়। এতে বেশকিছু গাছপালা ভেঙে পড়ে ও ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ডেমা এলাকার রিয়াদ হোসেন বলেন, মুহূর্তেই ঘরের চালসহ সবকিছু ঝড়ে উড়ে গেছে। এখন খোলা আকাশে রয়েছি। কয়েক দিন পর ঈদ। কী করব কিছুই বুঝতে পারছি না। সরকারের সহযোগিতা না পেলে এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারব না।

গোবরদিয়া এলাকার নিলা বেগম বলেন, সকালবেলা ঘেরে কাজ করছিলাম। হঠাৎ কিছু বুঝার আগেই দমকা হাওয়ায় ঘরের চাল, বেড়াসহ সবকিছু উড়ে গেছে। এখন খোলা আকাশের নিচে আছি।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আকস্মিক ঝড়ে বেশকিছু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া গাছপালা উপড়ে পড়েছে। এ সময় কচুয়া উপজেলায় বজ্রপাতে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। ক্ষতিপূরণ নিরূপণের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তালিকা পেলেই  ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

শেখ আবু তালেব/এমজেইউ