ক্রেতাদের ভিড়ে মধ্য রাতেও সরগরম সাধ্যের বাজার
আর মাত্র একদিন পরেই মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। ঈদকে ঘিরে ফেনীর অভিজাত বিপণি বিতানগুলোতে কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মানুষজন। তবে নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রেতারা ভিড় করছেন ভ্রাম্যমাণ ফুটপাতের দোকানে। ব্যবসা জমে ওঠায় দোকানিদের মুখে ফুটেছে হাসি।
সোমবার (৮ এপ্রিল) দিবাগত রাত ২টার দিকে শহরের ট্রাংক রোড ও শহিদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়ক ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বিজ্ঞাপন
ভ্রাম্যমাণ দোকানের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, ঈদ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতার সংখ্যাও বাড়ছে। সকালে চাপ না থাকলেও বিকেল হওয়ার পরপরই ক্রেতাদের চাপ বাড়তে থাকে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রতিষ্ঠান ও বিপণি বিতানের তুলনায় ঈদ সামগ্রীর দাম ফুটপাতে অনেকটা সাধ্যের মধ্যে থাকায় এখানে আসছেন নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষজন। তারমধ্যে বেশিরভাগ লোকজনই আতর, টুপি ও পাঞ্জাবি কিনতে দোকানগুলোতে ভিড় করছেন।
বিজ্ঞাপন
মোস্তাফিজুর রহমান নামে ভ্রাম্যমাণ দোকানের এক ক্রেতা বলেন, শহরে টিউশনি করে নিজের পড়াশোনার খরচ চালাতে হয়। ইচ্ছে থাকলেও শপিংমল থেকে দামি পোশাক কেনা সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও গত দুয়েক দিন বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেড় থেকে দুই হাজার টাকার নিচে কোনো পাঞ্জাবি পাইনি। সেজন্য ফুটপাতের এ দোকান থেকে আজকে ৬০০ টাকা দিয়ে একটি পাঞ্জাবি নিয়েছি। সঙ্গে বাবা ও ছোট ভাইয়ের জন্যও নিয়েছি।
রেজাউর নামে আরেক ক্রেতা বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে বাবার জন্য পাঞ্জাবি কিনতে এসেছি। এখানে দামও তুলনামূলক অনেক কম। আমাদের মতো সীমিত আয়ের মানুষদের জন্য এ দোকানগুলোই ভরসা। বাইরের দোকানে দাম বাজেটের মধ্যে নেই।
মঞ্জিলা আক্তার নামে আরেক ক্রেতা বলেন, আমি পৌরসভার ঝাড়ুদারের কাজ করি। তারপরও ছেলে-মেয়েদের খুশি করতে ঈদের কিছু কেনাকাটা করছি। এখান থেকে জামাকাপড়, টুপি ও পাঞ্জাবি নিয়েছি। কম দামে মোটামুটি ভালো পণ্যই পাওয়া যাচ্ছে ফুটপাতের দোকানে।
শহরের জহিরিয়া মসজিদের সামনে আতর, টুপি ও পাঞ্জাবি বিক্রি করছেন মোহাম্মদ নূর নবী। ঈদ উপলক্ষ্যে বেচাকেনার বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, রমজানের শেষদিকে বেচাকেনা বাড়ে। আমাদের বেশিরভাগ ক্রেতাই নিম্নমধ্যবিত্ত। সেজন্য দামও তুলনামূলক কম। গত তিনদিন বিক্রি অনেক বেড়েছে। দৈনিক ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকাও বিক্রি হচ্ছে।
সাহাব উদ্দিন নামে আরেক বিক্রেতা বলেন, গত কয়েক বছর ধরেই ফুটপাতে বেচাকেনা করে সংসার চলছে। তবে ঈদ উপলক্ষ্যে একটু বেশি পুঁজি দিতে হয়। রমজান মাস শেষের দিকে চলে এসেছে। মানুষজন ঈদের কেনাকাটা প্রায় সেরে ফেলছেন। আমাদের ব্যবসাও জমজমাট হয়ে উঠেছে। এখন পর্যন্ত আশানুরূপ বিক্রি হচ্ছে। অল্প কিছু লাভে বিক্রি করায় ক্রেতাদের ভালো সাড়া পাচ্ছি।
ফেনী শহর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পারভেজুল ইসলাম হাজারী বলেন, মানুষ নির্বিঘ্নে ব্যবসা করছে। কোনো ধরনের সমস্যা হচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ফেনী স্থানীয় সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন সমন্বিতভাবে মাঠে কাজ করছে।
তারেক চৌধুরী/এএএ