স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে কারারক্ষী কারাগারে
নিহত রুমা আক্তার ও তার স্বামী কারারক্ষী মো. খাইরুল ইসলাম
বিয়ের দেড় বছরের মাথায় নির্যাতন করে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারের কারারক্ষী মো. খাইরুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে তাকে কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হলে বিচারক শহীদুল ইসলাম কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারের সরকারি কোয়ার্টারে কারারক্ষী মো. খাইরুল ইসলামের অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়ে স্ত্রী রুমা আক্তার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে তাকে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে বাজিতপুরের ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটলে মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেয়ার সময় সন্ধ্যার পর পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) রাতে রুমা আক্তারের মা বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা করেন।
বিজ্ঞাপন
জানা গেছে, প্রায় দেড় বছর আগে মুঠোফোনে কথা বলা থেকে সম্পর্ক গড়ে কটিয়াদী উপজেলার পূর্বমণ্ডল ভোগ গ্রামের আবদুল মান্নানের মেয়ে রুমা আক্তারের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারের কারারক্ষী টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার বাইচাইল গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে খাইরুল ইসলাম। বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই খাইরুল ইসলামের পরিবার থেকে যৌতুকের জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে রুমার পরিবার খাইরুল ইসলামের হাতে যৌতুক হিসেবে নগদ তিন লাখ টাকা এবং তিন ভরি স্বর্ণালঙ্কার তুলে দেয়। তারপরও যৌতুকের টাকার জন্য রুমার ওপর অমানুষিক নির্যাতন চলত। নির্যাতনের শিকার হয়ে মঙ্গলবার প্রাণ হারান রুমা।
কিশোরগঞ্জ মডেল থানা পুলিশের ভারপা্রপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু বকর সিদ্দিক জানান, এ ঘটনায় রুমা আক্তারের মা মামলা করেছেন। অভিযুক্ত কারারক্ষী মো. খাইরুল ইসলামকে কটিয়াদী উপজেলার মশ্চিম মন্ডলভোগ এলাকা থেকে বুধবার গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে তোলা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বিজ্ঞাপন
কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার বজলুর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, খাইরুল ইসলাম অসুস্থতার জন্য চিকিৎসাজনিত কারণে ছুটিতে ছিলেন। ইতোমধ্যেই স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। তার মামলা সংক্রান্ত কাগজপত্র পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরএআর