ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ঈদগাহে শাহজাহান মিয়া (১৯) নামে এক তরুণকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার উজানচর উত্তরপাড়া ঈদগাহে এ ঘটনা ঘটে।  নিহত শাহজাহান গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, এলাকায় আবদুর রশিদ মাস্টার ও নূরুল ইসলামের দুটি বংশের লোকজনের মধ্যে বিরোধ বহু দিনের পুরোনো। নুরুল ইসলামদের বংশের লোকজন বেশি হলেও শিক্ষা ও প্রভাবে কম লোক নিয়েই শক্তিশালী রশিদ মাস্টারের বংশের লোকজন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নুরুল ইসলামের বংশের লোকজন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল্লাহ আল ফয়সালের পোস্টার সাঁটায় এলাকায়। কিন্তু রশিদ মাস্টারের লোকজন হুমকি দেয় এলাকায় থাকলে ফয়সালের নির্বাচন করা যাবে না এবং কিছু পোস্টারও ছেঁড়া হয়। বিরোধের জেরে বুধবার উচাখিলা বাজারের দুই পক্ষের মধ্যে মৃদু মারামারিও হয়।

বৃহস্পতিবার ঈদের দিন উজানচর উত্তরপাড়া ঈদগাহ মাঠে সকাল ১০টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ঈদের নামাজ পড়তে নুরুল ইসলামের বংশের লোকজনকে রশিদ মাস্টারের বাড়ির সামনে দিয়ে যেতে হয়। নামাজ ও খুতবা শেষে দোয়ার আগ মুহূর্তে নূরুল ইসলামের ছেলে শাহজাহান মিয়াকে ছুরিকাঘাত করা হয়। তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রশিদ মাস্টারের নাতি পিহান মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে। 

স্থানীয় বাসিন্দা অ্যাডভোকেট শাহজাহান কবীর সাজু বলেন, দুই বংশের মধ্যে আগে থেকে বিরোধ ছিলো। বুধবারও উচাখিলা বাজারে মারামারি হয়। এর জের ধরেই হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে।

ঘটনার পর থেকে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে রশিদ মাস্টারের লোকজন। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। 

ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজেদুর রহমান বলেন, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর পোস্টার লাগানোকে কেন্দ্র করে বিরোধ তৈরি হয়। ঈদের জামাত শেষে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনাটি ঘটে। ছুরিটি উদ্ধার করা যায়নি। তাৎক্ষণিক একজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত অন্তত ৭ জনের নাম পাওয়া গেছে। তাদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে। হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।

উবায়দুল হক/আরএআর