নারী কাউন্সিলরকে মারধরের দায়ে আরেক কাউন্সিলর বহিস্কার
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) সংরক্ষিত এক নারী কাউন্সিলরকে মারধরের দায়ে আরেক কাউন্সিলর মো. সামসুজ্জোহাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। রোববার (১২ মে) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেন গণমাধ্যমকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
সামসুজ্জোহা নাসিকের ২৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। অন্যদিকে মারধরের শিকার সানিয়া আক্তার নাসিক ২৫,২৬ ও ২৭নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।
বিজ্ঞাপন
জাকির হোসেন বলেন, ‘টিসিবি পণ্য বিতরণে দুর্নীতি এবং তাতে বাধা দিলে এক সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগের প্রাথমিক তদন্তের পর তার বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। বরখাস্তের বিষয়ে অভিযুক্ত কাউন্সিলরকেও সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য ওই ওয়ার্ডে আরেক জন কাউন্সিলরকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হবে।’
এর আগে, গত ৭ মে বরখাস্তের বিষয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ শামছুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
বিজ্ঞাপন
উল্লেখ্য, গত ৫ মার্চ সন্ধ্যায় ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের অনুকূলে আসা টিসিবির পণ্য বিতরণে দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির প্রতিবাদ করায় সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরক সানিয়া আক্তারকে মারধর ও লাঞ্ছিত করেন সামসুজ্জোহা ও তার লোকজন। এ ঘটনায় সানিয়া বন্দর থানায় একটি লিখিত অভিযোগও করেন। অভিযোগে কাউন্সিলর সামসুজ্জোহা (৫০) ছাড়াও তার ভাই মো. জাহাঙ্গীর (৩৭) ও মো. রিপনকে (৪০) অভিযুক্ত করা হয়। যদিও পরদিন একই থানায় পাল্টা অভিযোগ করেন কাউন্সিলর সামসুজ্জোহা।
সানিয়া আক্তারের অভিযোগে ছিল, কাউন্সিলর সামসুজ্জোহা গত বছরের ৯ জানুয়ারি ২ হাজার পরিবারের জন্য আসা টিসিবির পণ্য বিতরণ না করে বিক্রি করে দেন। এ কারণে ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ১৯০০ পরিবারের জন্য আসা টিসিবির পণ্য বিতরণের আগে গুনে দেখতে চান সানিয়া। এতে বাধা দেন সামসুজ্জোহা। পরে তাকে অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে চড়-থাপ্পড় মারেন।
তখন অভিযুক্ত কাউন্সিলর মো. সামসুজ্জোহা বলেন, ‘পণ্য বিতরণের দিন কাউন্সিলর সানিয়াকে বিকেল চারটায় কল করি। কিন্তু তিনি এসেছেন সন্ধ্যা ৬টায়। ততক্ষণে অনেক মানুষকে টিসিবির পণ্য বিতরণ করা হয়ে গেছে। তখন টিসিবির পণ্য গুনতে চাইলে তাকে বলি, বিতরণ থামিয়ে গুনতে গেলে লোকজন অযথা হয়রানি হবে। পরে প্যাকেট গুনলেই তো হবে। কিন্তু সে না শুনে আমার সাথে উচ্চবাচ্য করতে থাকে। এ নিয়ে আমাদের মধ্যে তর্ক হয়। তখন কাউন্সিলর সানিয়ার সচিব আমার দিকে তেড়ে আসে। তাকে চড় মারতে গিয়ে কাউন্সিলরের গায়ে গিয়ে পড়ে। হঠাৎ করেই ব্যাপারটা ঘটে গেছে।’
এদিকে, এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন। তদন্তে সামসুজ্জোহার বিরুদ্ধে টিসিবি পণ্য বিতরণে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অনিয়ম এবং নারী কাউন্সিলরকে শারীরিকভাবে আঘাত করার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় বলে মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিনিধি/এসএমডব্লিউ