লক্ষ্মীপুরে পেঁয়াজ চুরির অপবাদ দিয়ে আবদুল ওহাব (৫৪) নামে এক বৃদ্ধকে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে রশি দিয়ে হাত ও পায়ে তালা লাগানো শিকল দিয়ে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১৮ মে) সকালে সন্ত্রাসী রেড জোন সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের পোদ্দার বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। একই ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য (মেম্বার) আবদুর রহিমসহ তার লোকজনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। এতে দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।

ভুক্তভোগী ওহাব নোয়াখালীরর চাটখিল উপজেলার দশঘরিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তাকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে বশিকপুর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহবুবুর রহমান জানান, বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে এক বৃদ্ধকে মারধরের অভিযোগে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। তারা চন্দ্রগঞ্জ থানায় রয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত চলছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজন জানায়, পোদ্দার বাজারে ইউপি সদস্য আবদুর রহিমের ভাই আবুল কালামের মুদি দোকান থেকে শুক্রবার এক বস্তা পেঁয়াজ চুরি হয়। শনিবার সকালে আবদুল ওহাব পোদ্দার বাজারে এলে ব্যবসায়ী কালাম পেঁয়াজ চুরির অভিযোগ এনে তাকে আটক করেন। এরপর কালাম তার ভাই আবদুর রহিমকে খবর দেয়। পরে আবদুর রহিমসহ ১০-১৫ জন লোক এসে সড়কের পাশে একটি বৈদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে ওহাবকে রশি দিয়ে হাত ও শিকল দিয়ে পা বাঁধে। পায়ে জড়ানো শিকলে তালা লাগানো ছিল। এসময় তাকে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ওহাবকে উদ্ধার করে স্বজনরা। তাকে বেঁধে রাখার একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ছবিতে টুপি মাথায় ওহাবকে বিমর্ষ দেখা গেছে।

থানা পুলিশ সূত্র জানায়, বিকেলে ঘটনাটি জানাজানি হলে ইউপি সদস্য আবদুর রহিম ও ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা হারুনুর রশিদকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তাদেরকে ছেড়ে দিলেও দুইজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সনাক্তে পুলিশ কাজ করছে।

ভূক্তভোগী আবদুল ওহাব সাংবাদিকদের বলেন, পার্শ্ববর্তী পোদ্দার বাজারে ঘুরতে আসলে আবুল কালাম পেঁয়াজ চুরির অপবাদ দিয়ে আটকে আমাকে মারধর করে। পরে তার ভাই রহিম মেম্বারসহ বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে আমাকে বেঁধে নির্যাতন চালায়। আমাকে কিছু বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি।

ইউপি সদস্য আবদুর রহিম বলেন, ওহাব পেঁয়াজ চুরি করেছে। এজন্য তাকে মারধর করা হয়।

বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাহফুজুর রহমান বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। বাজারের ব্যবসায়ী ও ইউপি সদস্য বিষয়টি আমাকে জানায়নি। তবে কেউ আইন হাতে তুলে নেওয়া ঠিক হয়নি।

বক্তব্য জানতে চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হকের মোবাইল ফোনে করলেও কল ধরেননি।

হাসান মাহমুদ শাকিল/এমএএস