রাজবাড়ীতে প্রচণ্ড গরমে এক মৌ চাষির ৯১ বাক্স মৌমাছি মরে গেছে। এতে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই মৌচাষি। শুক্রবার (১৭ মে) বিকেলে সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের শায়েন্তাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ক্ষতিগ্রস্ত মৌ চাষির নাম মো. খলিফর রহমান (৬৫)। তার বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার পটুয়াপাড়া গ্রামে। তিনি দিনাজপুরে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে পরিবারসহ থাকেন। তিনি প্রতি মৌসুমেই রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের শায়েন্তাপুর গ্রামে মধু সংগ্রহের জন্য যান।

মৌ চাষি মো. খলিফর রহমান বলেন, প্রায় এক যুগ আগে আমি বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) থেকে আধুনিক পদ্ধতিতে মৌ চাষের প্রশিক্ষণ নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে মৌমাছির চাষ শুরু করি। প্রতিবছর মৌসুমে আমি রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নে আসি মধু সংগ্রহ করতে।

জানা গেছে, গত সোমবার (১৩ মে) দিনাজপুর থেকে ট্রাকে করে ২৫১ বাক্স মৌমাছি নিয়ে রাজবাড়ীতে আসছিলেন মৌচাষি মো. খলিফর রহমান। পথে রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের মনসার বটতলা এলাকায় এলে একটি প্রাইভেটকারের সঙ্গে তাদের ট্রাকটির একটু ঘষা লাগে। এসময় প্রাইভেটকারের চালক পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে মৌ বোঝাই ট্রাকের কাগজপত্র চেক করতে থাকে। কাগজ চেক করতে প্রায় তিন ঘণ্টা সময় লেগে যায়। পরে সেখান থেকে বের হয়ে শায়েন্তাপুর গ্রামে এসে ট্রাক থেকে মৌমাছির বাক্স নামালে দেখা যায় প্রচণ্ড গরমে ৯১টি বাক্সের সব মৌমাছি মরে গেছে।

মৌচাষি মো. খলিফর রহমান বলেন, আমি পুলিশকে বলেছিলাম যে আমার ট্রাকে মৌমাছি আছে। আমাকে একটু তাড়াতাড়ি ছেড়ে দেন। কিন্তু পুলিশ আমার কথা শোনেনি। যে কারণে আমার এত বড় ক্ষতি হয়ে গেল। আমার পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

শায়েন্তাপুর গ্রামের মতিউর রহমান মুন্নু বলেন, এলাকায় মৌমাছি থাকলে ফসলের উৎপাদন ভালো হয়। এজন্য প্রতি মৌসুমে আমার মেহগনি বাগানে মৌ চাষ করার জন্য খলিফর রহমানকে আনি। এতে উনিও লাভবান হন, আমাদেরও ফসল ভালো হয়। তবে এবার মৌমাছি আনতে গিয়ে প্রচণ্ড গরমে ওনার ৯১ বাক্স মৌমাছি মারা গেছে। এতে উনার বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে।

রাজবাড়ী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জনি খান বলেন, মৌ চাষিদের প্রশিক্ষণসহ সব সমস্যা-সম্ভাবনার বিষয় দেখার দায়িত্ব বিসিকের। যেহেতু উনি অন্য জেলার চাষি, সেহেতু উনি ওনার জেলার বিসিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সহযোগিতা চাইতে পারেন।

মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/এসএসএইচ